Just In
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যায় ভুগছেন? জেনে নিন এই সমস্যা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
আজকাল বেশিরভাগ মহিলাই অনিয়মিত মাসিক বা পিরিয়ডের সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে যারা অবিবাহিত, তাদের মধ্যে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এর ফলে নানা রকমের শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
তবে ঘরোয়া কিছু উপায়ে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। তাহলে জেনে নিন এই সমস্যা দূর করতে কী করবেন।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব কী?
নিয়মিত মাসিক চক্র সাধারণত ২৮-৩৫ দিনের পরে ঘটে, যা ৪-৬ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে ঋতুস্রাব যদি ৩৫ দিন পরেও শুরু না হয় এবং প্রতিবার বিভিন্ন সংখ্যক দিনের ব্যবধানে দেখা দেয়, তবে তা অনিয়মিত বলে গণনা করা যেতে পারে।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের উপসর্গ
১) মাসিক চক্রের দৈর্ঘ্য ৩৫ দিনেরও বেশি সময় বেড়ে যায়।
২) পরপর তিনটিরও বেশি চক্র হারানো।
৩) অত্যধিক রক্তপাত এবং জমাট বাঁধা রক্ত বেরোনো।
৪) পেটে ব্যথা এবং কোমর ও পিঠে যন্ত্রণা হওয়া।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণ
১) হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
২) গর্ভনিরোধক ঔষধের ব্যবহার
৩) স্থূলতা
৪) জীবনযাত্রার পরিবর্তন - অগোছালো জীবনযাত্রা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
৫) দুশ্চিন্তা এবং স্ট্রেস
৬) থাইরয়েড ডিসঅর্ডার
৭) পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, প্রভৃতি।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের জন্য ঘরোয়া প্রতিকার
১) আদা
আদা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারি। অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কাঁচা আদা খেতে পারেন। আদা জরায়ুর পেশী সংকোচনে সহায়তা করে এবং হরমোনের ভারসাম্যও ঠিক রাখে। সকালে অথবা সন্ধ্যায় খালি পেটে, লেবুর রস এবং এক চামচ মধু সহযোগে, এক গ্লাস গরম আদা চা পান করলে, উপকার পাবেন।
২) গুড়
গুড়ের মধ্যেও নানান ঔষধি গুণ বর্তমান। গুড়ের নিয়মিত সেবন অনিয়মিত ঋতুচক্র নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। এটি জরায়ুর ক্র্যাম্পস কমাতেও সহায়তা করে।
৩) হলুদ
হলুদের ঔষধি গুণ সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-স্প্যাসমডিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান, যা জরায়ুর ক্র্যাম্পস হ্রাস করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন হালকা গরম দুধে হলুদ ও মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
৪) অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা জুস মাসিক নিয়ন্ত্রণে এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে দুর্দান্ত কাজ করে। এছাড়াও, এটি বিপাক বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্র সুস্থ রাখে। এমনকি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং অনিয়মিত ঋতুস্রাব চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সহায়তা করে। তবে মাসিক চলাকালীন অ্যালোভেরা ব্যবহার করবেন না। এটি জরায়ু সংকোচন বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৫) অ্যাপল সিডার ভিনেগার
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার দুর্দান্ত কাজ করে। এটি ওজন কমাতে এবং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের সাথে মধু মিশ্রিত করে খেতে পারেন।
৬) দারুচিনি
দারুচিনি জরায়ুতে রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং অনিয়মিত ঋতুস্রাব চিকিৎসা করতে পারে। এমনকি ঋতুস্রাবের কারণে হওয়া পেটে ব্যথা এবং বমি ভাব কমাতেও সাহায্য করতে পারে। এক গ্লাস দুধে এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে সেবন করতে পারেন।
৭) শরীরচর্চা
গবেষণা অনুযায়ী, যোগব্যায়াম করলে মেনস্ট্রুয়াল পেন এবং পিরিয়ডস সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা কমাতে পারে। ডিপ্রেশন ও উদ্বেগ কমাতেও সহায়তা করে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রেও শরীরচর্চা অত্যন্ত কার্যকর। এক্সারসাইজ করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
Disclaimer : আর্টিকেলে বর্ণিত টিপস বা পরামর্শগুলি সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া। তাই কোনও কিছু করার আগে অবশ্যই পেশাদার কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। কোনও শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।