Just In
Don't Miss
সকালে খালি পেটে ফল খাওয়া কি ক্ষতিকারক?
ফলে থাকে জল, শর্করা, ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন এবং ফাইবার। এই উপাদানগুলি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়।
"ভরা পেটে ফল, আর খালি পেটে জল"- এই কথাটা সেই জ্ঞান হওয়া থেকে শুনে আসছি। কিন্তু কখনও তলিয়ে দেখার চেষ্টা করিনি যে ধরণা ঠিক, না ভুল! তবে বিজ্ঞান থেমে থাকেনি। এই প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টায় গত কয়েক দশকে একাধিক গবেষণা হয়েছে। তাতে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা বাস্তবিকই চমকপ্রদ।
ফলের শরীরে থাকা একাধিক পুষ্টিকর উপাদান কতটা আমাদের শরীরের কাজে লাগছে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে কোন সময় ফল খাওয়া হচ্ছে তার উপর। এখানেই বিজ্ঞানের সাহায্য়ের প্রয়োজন পরবে আমাদের। কারণ শরীর বিজ্ঞানের মতে খালি পেটে ফল খেলে দেহের সবথেকে উপকারে লাগে। কারণ সেক্ষেত্রে পুষ্টিকর উপাদানগুলি সবথেকে ভালভাবে শরীর দ্বারা শোষিত হয়। আর এমনটা হলে ধীরে ধীরে একাধিক রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করে। যেমন ধরুন...
১. বদ-হজমের সমস্যা দূর হয়:
ফলে থাকে জল, শর্করা, ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন এবং ফাইবার। এই উপাদানগুলি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি কনস্টিপেশন এবং আরও নানা ধরনের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিকাল সমস্যার সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু কেস স্টাডি করার সময় চিকিৎসকেরা লক্ষ করেছেন ভারি খাবার খাওয়ার ১৫-২০ মিনিট আগে ফল খেলে খাবার হজমের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে গ্যাস-অম্বল হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
২. শরীরে ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি পূরণ হয়:
শরীরকে সচল রাখতে ভিটামিন এবং খনিজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই কোনও সময় যাতে এই দু ধরনের উপাদানের ঘাটতি না দেখা দেয় সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে ফল দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে? সকাল সকাল খালি পেটে পছন্দের যে কোনও ফল খেলে তার মধ্যে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ সম্পূর্ণ মাত্রায় শরীরের কাজে লাগে। কিন্তু ভরা পেটে ফল খেলে এত পরিমাণ উপকার পাওয়া যায় না। তাই তো চিকিৎসকেরা ব্রেকফাস্টের আগে প্রতিদিন এক বাটি ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৩. ডায়াবেটিসকে দূরে রাখে:
ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের, বিশেষত ব্লাড সেল এবং ব্রেন সেলের শর্করা বা সুগারের প্রয়োজন পরে। আসলে শর্করা ছাড়া কোষেদের ব্যাটারি রিচার্জ হতেই চায় না। সেই কারণেই তো সকাল সকাল ফল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ফলে উপস্থিত শর্করা সহজে কোষের অন্দরে প্রবেশ করে যায়। ফলে নিমেষে কোষেরা চাঙ্গা হয়েওঠে। সেই সঙ্গে ব্রেন এবং শরীরও। প্রসঙ্গত, ফলে থাকা শর্করা হল "লো গ্লায়কেমিক সুগার", যা শরীরে পক্ষে খুব উপকারি, বিশেষত রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখতে ফলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাছাড়া ফলে উপস্থিত ফাইবার অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমার সুযোগ পায় না। আর একথা তো সবারই জানা যে দেহে ক্যালরির মাত্রা যত নিয়ন্ত্রণে তাকবে, তত ডায়াবেটিসের মতো লাইলস্টাইল ডিজিজও দূরে থাকবে।
৪. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়:
বেশিরভাগ ফলেই পেকটিন নামে এক ধরনের ফাইবার থাকে, যা এল ডি এল বা বাজে কোলেস্টরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, সেই সঙ্গে ইন্টেস্টাইনের অন্দরে যাতে এল ডি এল কোলেস্টরল প্রবেশ করতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৫. কনস্টিপেশন সমস্যা দূর করে:
প্রতিদিন সকালেই কী অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়? এদিকে অ্যালোপ্যাথি থেকে হোমিওপ্য়াথি- সব ধরনের চিকিৎসা করেও ফল পাচ্ছেন না? তাহলে এবার থেকে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ফল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন। কারণ ফলে উপস্থিত ফাইবার কোলন থেকে অতিরিক্ত জল শুষে নেয়, সেই সঙ্গে পটির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে এই ধরনের রোগের হাত থেকে মুক্তি দেয়। সেই সঙ্গে পাইলসের মতো রোগকেও দূরে রাখে।
৬. এনার্জির ঘাটতি দূর করে:
ব্লাড সেল এবং ব্রেন সেল যত অ্যাকটিভ থাকবে, শরীর তত চাঙ্গা থাকবে। আর খালি পেটে ফল খেলে এই দুই ধরনের সেলের শর্করার চাহিদা সহজেই পূরণ হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের এনার্জির ঘাটতি দূর হয়। তাছাড়া ফলে উপস্থিত ভিটামিন এবং নানাবিধ খনিজও এনার্জির ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. শরীরকে বিষমুক্ত করে:
প্রায় সব ফলই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ হয়। এই তনিটি উপাদান শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদান বা বিষকে বের করে দেয়। ফলে এনার্জির ঘাটতি তো দূর হয়ই, সেই সঙ্গে ত্বক এবং শরীরের বয়সও কমতে শুরু করে এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ে। ফলে যে কোনও ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।