Just In
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় যেসব খাবার খাবেন
শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক রাখতে হরমোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে যে রাসায়নিক বার হয়, তা রক্তের মাধ্যমে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নানা বার্তা পৌঁছে দেয়। তার ফলে আমাদের খিদে পায়, ঘুম হয়, ত্বক সুন্দর থাকে, মন ফুরফুরে থাকে। প্রজনন ক্ষমতা ঠিক থাকার পিছনেও রয়েছে হরমোনের প্রভাব। এই হরমোনের গোলমালে মানসিক, শারীরিক সব ধরনের অসুখ হতে পারে।
হরমোনের মাত্রা ঠিক না থাকলে অনেক কঠিন অসুখ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। তাই দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই জরুরি। অনেকেই হয়তো ভাববেন হরমোনের ভারসাম্য আবার কী করে বজায় রাখব, খুব সহজ উপায় রয়েছে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আজ থেকেই যোগ করুন কিছু খাবার তাহলে আর হরমোনের সমস্যায় ভুগতে হবে না আপনাকে।
রেইনবো ডায়েট
হরমোনের ব্যালান্সে আজ থেকেই শুরু করে দিতে পারেন রেইনবো ডায়েট। এই ডায়েট-এ মূলত থাকে সব রঙের খাবার থাকে, সে ফলও হতে পারে আবার সবজি। বিভিন্ন রঙের খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে যেমন উপকারি তেমন আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। রেইনবো ডায়েট চার্ট -
বেগুনি - বেগুন, বেগুনি বাঁধাকপি
নীল - ব্লু বেরি
সবুজ - ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি
হলুদ - হলুদ বেল পেপার, অ্যাভোকাডো
লাল - আপেল, তরমুজ, চেরি, স্ট্রবেরি, বীটরুট
ওপরের তালিকার প্রতি ভাগ থেকে একটি করে ফল বা সবজি যদি প্রতিদিন খেতে পারেন তাহলে হরমোনের সমস্যায় পড়তে হবে না আপনাকে।
মাছ, মাংস
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে খান প্রোটিন জাতীয় খাবার। চেষ্টা করুন আপনার প্রতিটি মিলে যেন প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকে। মাংস, মাছ, ডিম, দুধ হাই প্রোটিনের উৎস। তাই লাঞ্চ হোক বা ডিনার, প্রোটিন জাতীয় খাবার মাস্ট। ডিম খেতে কম-বেশি সবাই পছন্দ করে, তাই মাছ মাংস না হলে শুধু ডিম খেলেও হরমোন ব্যালেন্স রাখা যাবে।
ডাল
যেকোনও ডালেই থাকে প্রোটিন, যা হরমোনের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই ডাল, সয়াবিন আজই খাদ্যতালিকায় যোগ করে নিন। রাজমা এবং চানাও হরমোনের ব্যালেন্সে সাহায্য করে।
বাদাম
যেকওনো বাদামের মধ্যে থাকে লিনোলেইক অ্যাসিড এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি। বাদাম শরীরের হরমোন নিঃসরণ বাড়িয়ে এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কাঠবাদাম, আমন্ড, আখরোট খুবই উপকারি।
ফলমূল
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে হাই ফাইবার ডায়েট। তাই খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন আপেল, স্ট্রবেরি, অ্যাভোকাডো, কলার মতো হাই ফাইবারযুক্ত ফল।
ব্রেকফাস্টে ভুলেও এসব খাবার খাবেন না, তাহলেই বিপদ!
শাকসবজি
প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি থাকলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। গাজর, বীট, ব্রকোলি, পালং শাক, মিষ্টি আলু, টমেটোর মতো সবজি হরমোনের ব্যালেন্সে সাহায্য করে।
চা
হরমোনের ব্যালেন্সে চা খুব উপযোগী। শুনে অনেকেই ভাবছেন তো, এটা কী করে সম্ভব। একদম ঠিক, চা খেলে হরমোনের ব্যালেন্স হয়। তবে দুধ চা নয় আপনাকে খেতে হবে হার্বাল টি। তুলসী, গ্রিন টি খেলে বাড়বে মেটাবলিজম, ডিটক্স সিস্টেম কাজ করবে ঠিকঠাক, যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় জরুরি। গ্রিন টি-তে থাকে ক্যাফিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। দিনে ১-৩ কাপ গ্রিন টি পান করতে পারেন আপনি।
নারকেল তেল
নারকেল তেলে থাকে লাউরিক অ্যাসিড এবং এমসিটি, হরমোন তৈরিতে যা অত্যন্ত উপকারি। ওজন কমাতেও সাহায্য করে নারকেল তেল। সেইসঙ্গে মেটাবলিজম বাড়ায় এবং এনার্জি জাগায় শরীরে।
ঘরে তৈরি ঘি বা বাটার
ঘরে তৈরি করা ঘি, বাটারে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-২, যা হরমোনের ব্যালেন্সে সাহায্য করে।
শীতে সুস্থ থাকতে ও শরীরকে হাইড্রেট রাখতে এই খাবারগুলি অবশ্যই খান
প্রোবায়োটিক খাবার
পাচনতন্ত্রের সমস্যার কারণে কিন্তু হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। তাই পেট ঠিক রাখা খুব দরকার। প্রোবায়োটিক খাবার, যেমন - দই, বাটারমিল্ক-এ থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া পাচনতন্ত্র ঠিক রাখে।
এবার আর হরমোনের সমস্যা নিয়ে চিন্তার কারণ নেই, সঠিক খাওয়াদাওয়া করলেই আপনি দূরে থাকতে পারেন হরমোনের সমস্যা থেকে।