Just In
সাবধান: এই বদ অভ্যাসগুলির কারণে কিন্তু আক্রান্ত হতে পারেন অ্যাস্থেমার মতো ক্রণিক রোগে!
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে সারা বিশ্বে প্রায় ১৫০০ মিলিয়ান মানুষ অ্যাস্থেমার মতো রোগের শিকার, যেখানে এদেশে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫-২০ মিলিয়ান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে সারা বিশ্বে প্রায় ১৫০০ মিলিয়ান মানুষ অ্যাস্থেমার মতো রোগের শিকার, যেখানে এদেশে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫-২০ মিলিয়ান। আর সবথেকে চিন্তার বিষয় হল আমাদের দেশের সিংহভাগ জনসাধারণই এমন কিছু ভুল অভ্যাসের শিকার, যা এমন রোগের প্রকোপ বৃ্দ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে। এবং ভয়টা হল সে বিষয়ে তারা জানেনও না। তাই তো এই প্রবন্ধটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া।
প্রসঙ্গত, যে যে বদ অভ্যাসের কারণে অ্যাস্থেমার মতো রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তার একেবারে প্রথমেই রয়েছে ধূমপান। আমাদের দেশে যে হারে কম বয়সিদের মধ্যে স্মোকিং-এর প্রবণতা বেড়েছে, তাতে অ্যাস্থেমার মতো রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগামী দিনে যে আরও বাড়বে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! প্রসঙ্গত, আরও যে যে বদ অভ্যাসগুলির কারণে এমন রোগের প্রকোপ বাড়ছে, সেগুলি হল- নিয়মিত শরীরচর্চা না করা, বেশি মাত্রায় প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার খাওয়া, মাত্রাতিরিক্ত স্ট্রেস এবং বারে বারে ঠান্ডা লাগা।
এখন প্রশ্ন এমন বদ অভ্যাস যাদের রয়েছে, তারা অ্যাস্থেমার মতো রোগের খপ্পর থেকে বাঁচবেন কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে এই লেখায় একবার চোখ রাখতে হবে। আসলে এই লেখায় এমন কিছু খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যা নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে একদিকে যেমন অ্যাস্থেমার প্রকোপ কমতে সময় লাগবে না, তেমনি ফুসফুসের ক্ষমতাও এতটা বেড়ে যাবে যে এমন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকবে না বললেই চলে। তাই তো বলি বন্ধু, অ্যাস্থেমায় আক্রান্ত হয়ে সারা জীবনে কষ্ট পেতে যদি না চান, তাহলে এই প্রবন্ধে আলোচিত বদ অভ্যাসগুলিকে যেমন ছাড়তে হবে, তেমনি যে যে খাবারগুলিকে রোজের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করাটা জরুরি, সেগুলি হল...
১. দুধ:
কি বন্ধু দুধ দেখলেই না সিঁটকোন নাকি? তাহলে কিন্তু বিপদ! কারণ যে হারে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে, তাতে ফুসফুসের বারোটা বাজতে যে সময় লাগবে না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ফুসফুসের স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে পরলে অ্যাস্থেমার মতো রোগও কিন্তু লেজুর হতে পারে। তাই তো বলি বন্ধু, ফুসফুসকে চাঙ্গা রাখার মধ্যে দিয়ে যদি অ্যাস্থেমার মতো রোগকে দূরে রাখতে হয়, তাহলে দুধ খাওয়া মাস্ট! আসলে দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ফুসফুসের পেশির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। ফলে নানাবিধ রোগ-ব্যাধি দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
২. গাজর:
এতে উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়ে যায়, যা অ্যাস্থেমার প্রকোপ কমাতে যেমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি এমন ধরনের ফুসফুসের রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে। তাই তো বলি বন্ধু, নানা বদ অভ্যাস এবং বায়ু দূষণের কারণে যেখানে অ্যাস্থেমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে, সেখানে সুস্থ থাকতে নিয়মিত গাজর খাওয়ার প্রয়োজন যে বেড়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই!
৩. পেঁয়াজ:
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা শ্বাসনালীর প্রদাহ কমিয়ে অ্যাস্থেমার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে কাঁচা পিঁয়াজ খেলেই বেশি উপকার মেলে, অন্যভাবে নয় কিন্তু!
৪. কফি:
কানকে বিশ্বাস করতে পারছেন না, তাই তো? তবে সত্যিই অ্যাস্থেমার প্রকোপ কমাতে কফি দারুন কাজে আসে। কারণ গরম গরম এক পেয়ালা কফি খেলে শ্বাসনালী খুলে যায়। ফলে অক্সিজেন খুব সহজেই ফুসফুসের অন্দরে প্রবেশ করে যায়। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে কফি যত কড়া হবে, তত উপকার পাবেন। তাই এবার থেকে শ্বাস নিতে সামান্য অসুবিধা হলেই কফি খেয়ে নেবেন। দেখবেন উপকার মিলবে। তবে দিনে ৩ কাপের বেশি কফি কিন্তু ভুলেও খাবেন না। কারণ এই পানীয়টি যতটা উপকারি, বেশি মাত্রায় খেলে কিন্তু ততটাই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
৫. আদা:
গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রকৃতিক উপাদানটির শরীরে থাকা বেশ কিছু উপকারি উপাদান শ্বাসনালীর প্রদাহ কমিয়ে অক্সিজেনের প্রবেশ যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসকষ্ট কমতে শুরু করে। এক্ষেত্রে সম পরিমাণে আদার রস, বেদানার রস এবং মধু মিশিয়ে একটা মিশ্রন তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রনটি দিনে ২-৩ বার খেলে দেখবেন দারুন উপকার মিলবে।
৬. মধু:
অ্যাস্থেমার চিকিৎসায় মধুর ব্যবহার বহু কাল ধরে হয়ে আসছে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির শরীরে রয়েছে বেশ কিছু উপকারি উপাদান, যা এমন রোগের প্রকোপ কমাতে দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে মধুর গন্ধ নিলেও অনেকের উপকার হয়। আর যদি এমনটা করে ফল না মেলে। তাহলে দিনে তিনবার, এক গ্লাস করে গরম জলে এক চামচ করে মধু মিশিয়ে পান করলে দারুন উপকার মিলবে।
৭. সরষের তেল:
একেবারে ঠিক শুনেছেন! শ্বাসকষ্ট কমাতে বাস্তবিকই সরষের তেল দারুন কাজে আসে। আসলে এই তেলটি রেসপিরেটারি প্যাসেজকে খুলে দেয়। ফলে শ্বাস নিতে কোনও কষ্টই হয় না। তাই এবার থেকে অ্যাস্থেমার অ্যাটাক হলেই অল্প করে সরষের তেল গরম করে নেবেন। তারপর সেটি অল্প ঠান্ডা করে বুকে-পিঠে ভাল করে মালিশ করতে থাকবেন। এমনটা করলেই ধীরে ধীরে লক্ষণ কমে যেতে শুরু করবে। সঙ্গে কমবে কষ্টও।
৮. রসুন:
হাফ কাপ দুধে পরিমাণ মতো রসুন ফেলে ভাল করে দুধটা ফোটান। তারপর হলকা ঠান্ডা করে দুধটা খেয়ে ফেলুন। এই পানীয়টা খাওয়ার পর দেখবেন কষ্ট কমতে সময় লাগবে না। আসলে ফুসফুস যাতে ঠিক মতো কাজ করতে পারে, সেদিকে রসুন নজর রাখে। ফলে সমস্যা কমতে সময়ই লাগে না।
৯. ডুমুর:
এতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। আর একবার ফুসফুস ঠিক মতো কাজ শুরু করে দিলে শ্বাস-প্রশ্বাসও স্বাভাবিকভাবে হতে শুরু করে। ফলে শ্বাসকষ্ট দূরে পালায়। এখন প্রশ্ন হল এমন পরিস্থিতিতে ডুমুরকে কাজে লাগাবেন কিভাবে? প্রথমে তিনটে ডুমুরকে সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা খালি পেটে জল এবং ডুমুর তিনটে খেয়ে ফেলুন। ব্যাস তাহলেই কেল্লাফতে!