Just In
Don't Miss
কোভিড ভ্যাকসিনের এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তার দেখান, নাহলে বিপদ বাড়তে পারে
করোনা ভাইরাস আজও আমাদের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। কোভিডের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রকাশ এবং তৃতীয় ঢেউ আসার সম্ভাবনার জন্য, প্রত্যেককে টিকা দেওয়া খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সর্বজনীন ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমেই, এই মারণ ভাইরাসকে কিছুটা হলেও বাগে আনা সম্ভব।
তবে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক, যা সাধারণত দু-একদিনের মধ্যেই কমে যায়। তবে ভ্যাকসিনের ফলে নতুন কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেই অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। তাহলে জেনে নিন করোনা টিকার কোন কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলি নজরে আসলে তত্ক্ষণাত্ চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ভ্যাকসিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া
করোনা ভ্যাকসিন থেকে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার, যা সাধারণত দু-তিন দিনের মধ্যে নিজে থেকেই কমে যায়। জ্বর, ঠান্ডা লাগা, ক্লান্তি এবং ইনজেকশন দেওয়া জায়গায় ব্যথা হওয়ার মতো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে, কোনও উপসর্গেরই বিকাশ ঘটে না।
আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে, পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হওয়ার মানেই সংক্রমণ ছড়ানো নয়। পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হওয়ার অর্থ হল, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করতে শুরু করেছে। তাই ভ্যাকসিনের ফলে হওয়া এই পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলি পরিচালনযোগ্য এবং কম উদ্বেগজনক।
কখন উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?
ভ্যাকসিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া করোনা সংক্রমণের মতো অতটা গুরুতর বা উদ্বেগজনক নয়। তবে কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যাকসিনের আনকমন কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যেগুলির দিকে অবিলম্বে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন, একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে জ্বর, অস্থিরতা, ক্লান্তি এবং ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু যদি কোনও ব্যক্তির মধ্যে ভ্যাকসিন নেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে, কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা তালিকাভুক্ত নতুন উপসর্গগুলি দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা তালিকাভুক্ত উপসর্গগুলি কী কী?
সেন্টারের মতে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কারও কারও মধ্যে নিম্নে তালিকাভুক্ত নতুন উপসর্গগুলি দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে অবিলম্বে সঠিক চিকিৎসা না করা হলে, এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। নতুন উপসর্গগুলি হল -
১) শ্বাসকষ্ট হওয়া।
২) বুকে ব্যাথা হওয়া।
৩) বমি বমি ভাব, বমি হওয়া কিংবা পেটে ক্রমাগত ব্যথা হওয়া।
৪) খিঁচুনি হওয়া।
৫) শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা হওয়া এবং হাত-পা ফুলে যাওয়া।
৬) দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
৭) ক্রমাগত এবং তীব্র মাথা যন্ত্রণা হওয়া।
৮) শরীরের যেকোনও অংশে দুর্বলতা অনুভব করা।
৯) ইনজেকশনের জায়গায় দাগ হয়ে যাওয়া।
ভ্যাকসিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নাকি করোনা সংক্রমণ : কোনটি বেশি ক্ষতিকর?
ভ্যাকসিনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কষ্টকর হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে কোভিডের সংক্রমণ অনেক বেশি বিপজ্জনক। বর্তমানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমনের বৃদ্ধি সারা বিশ্বের অন্যতম প্রধান চিন্তার বিষয়। বলা হয়েছিল যে, এই ভাইরাসটি ভ্যাকসিন ইমিউনিটিকেও পরোয়া করে না, তবে যারা এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন নেয়নি তাদের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে গুরুতর সংক্রমণের ঝুঁকি বেশ কম। তাই সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, ভ্যাকসিনই একমাত্র ভরসা।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর মতানুসারে, এখনও যাদের ভ্যাকসিন হয়নি তাদের কোভিডের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুণ এবং মৃত্যুর ঝুঁকিও ১০ গুণ বেশি। তাই এই মারণ ভাইরাস থেকে নিজেদের এবং প্রিয়জনের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে ভ্যাকসিন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।