Just In
ভারতে করোনা এন্ডেমিসিটির পর্যায়ে প্রবেশ করতে পারে, জেনে নিন এন্ডেমিক কী এবং এর অর্থ
করোনা মোকাবিলা এখনও বিশ্বজুড়ে চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখ্যবিজ্ঞানী ডাঃ সৌম্য স্বামীনাথন-এর মতে, ভারতে করোনা ভাইরাস এন্ডেমিসিটির পর্যায়ে প্রবেশ করতে পারে, যেখানে নিম্ন স্তরের এবং মাঝারি স্তরের সংক্রমণ থেকে যেতে পারে। তবে কয়েক মাস আগে যেভাবে কোভিডের কেস বেড়েছিল, তা এখন দেখা যাচ্ছে না।
ডাঃ স্বামীনাথন-এর মতে, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনসংখ্যা এবং ইমিউনিটি স্ট্যাটাস দেখে মনে হয় যে, দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিস্থিতি উত্থান-পতনের অবস্থায় থাকতে পারে। যেখানে প্রথম এবং দ্বিতীয় ওয়েভে বেশি কেস দেখা যায়নি এবং যেখানে টিকা প্রদানের হার কম, সেখানে এইবার বেশি কেস দেখা যেতে পারে।
এন্ডেমিসিটি কী?
এন্ডেমিক একটি রোগ, যা কোনও জায়গায় ধারাবাহিকভাবে বর্তমান, কিন্তু একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে। এর মানে হল, রোগের বিস্তার এবং অসুস্থতার হার অনুমান করা যেতে পারে। WHO-এর চিফ সায়েনটিস্ট ডাঃ সৌম্য স্বামীনাথন-এর মতে, এন্ডেমিক স্টেজ হল, যখন একটি জনসংখ্যা ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই বসবাস করতে বা বাঁচতে শেখে, অর্থাৎ এই ভাইরাস কখনও যায় না। এটি মহামারী পর্যায়ের থেকে একেবারেই আলাদা।
প্যান্ডেমিক এবং এন্ডেমিকের মধ্যে পার্থক্য
২০২০ সালের মার্চ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ কে গ্লোবাল প্যান্ডেমিক হিসেবে ঘোষণা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নতুন রোগকে মহামারী বলা হয়েছিল। ইন্টারন্যাশনাল এপিডেমিওলজি অ্যাসোসিয়েশনের এপিডেমিওলজি ডিকশনারি অনুসারে, বিশ্বব্যাপী মহামারী যা সারা বিশ্বে বিপুল সংখ্যক মানুষকে গ্রাস করে তাকেই মহামারী বলা হয়। তবে চিকেন পক্স, ম্যালেরিয়ার মতো এন্ডেমিক রোগগুলি নতুন নয় এবং তাদের সংক্রমণের হার অনুমান করা যায়। CDC অনুসারে, এন্ডেমিক সেই রোগগুলিকে বলা হয়, যার সংক্রামক এজেন্টগুলি একটি নির্দিষ্ট এলাকার জনসংখ্যায় ক্রমাগত উপস্থিত থাকে।
করোনা ভাইরাস কি এন্ডেমিক?
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ এন্ডেমিক হয়ে যেতে পারে। এর মানে হল, করোনা ভাইরাস কখনও যাবে না এবং আমাদের এর সাথেই বেঁচে থাকার অভ্যাস করতে হবে। প্রথম দিকে আশা করা হয়েছিল যে, যদি সবাইকে টিকা দেওয়া হয়, তাহলে সবার মধ্যে ইমিউনিটি তৈরি হবে, ফলস্বরুপ এই ভাইরাস সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়ে যাবে। কিন্তু ডেল্টা ভেরিয়্যান্ট এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে যে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্যাকসিন থেকে পাওয়া ইমিউনিটি দীর্ঘ সময়ের জন্য রক্ষা নাও করতে পারে।
তাহলে কি করোনা ভাইরাস চিরকাল থেকে যাবে?
কিছু দেশ আছে যারা এখনও আশা জাগিয়ে রেখেছে যে, তাদের দেশ সম্পূর্ণভাবে করোনা মুক্ত হবে। চীন এবং অস্ট্রেলিয়ায় কঠোর লকডাউন, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং, টেস্টিং, কোয়ারান্টিন এবং বর্ডার সিল করে করোনা মোকাবিলার চেষ্টা চলছে, যদিও ডেল্টা ভেরিয়্যান্ট এই দেশগুলিতে পৌঁছে গেছে।
টিকার প্রভাব কতটা হবে?
এই পরিস্থিতিতে, আপাতত টিকার উপরই আশা রাখা হচ্ছে। বুস্টার শটের প্রয়োজন আছে কি নেই তা এখনও স্পষ্ট নয়, কিন্তু ভ্যাকসিন প্রয়োগ করোনাকে মারাত্মক হতে বাধা দিতে পারে। তবে সময়ের সাথে সাথে, এই ভ্যাকসিনের প্রভাব শরীরে কমতে শুরু করবে কি না তা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।