Just In
- 9 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 10 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 14 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 15 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
Don't Miss
কোভিডের সংক্রমণের ফলে দেখা দিচ্ছে ফুসফুসের এই কঠিন রোগ! জানুন রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। কোভিডের বিষাক্ত ছোবলে প্রাণ হারাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হচ্ছে আমেরিকা, ভারত, ব্রিটেন, ব্রাজিল, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলি। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিনিয়ত ভাইরাসের চরিত্র বদলই মানুষকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বের বহু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, করোনা ভাইরাস যেহেতু মানুষের ফুসফুসকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তাই মারাত্মকভাবে এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের ফুসফুস আর কখনই সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। ব্রিটেনের একদল চিকিৎসক জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা প্রাণে বাঁচলেও তাদের অনেকের ফুসফুসে পালমোনারি ফাইব্রোসিস নামে একটি রোগ দেখা দিতে পারে। আর এই রোগ কিন্তু সহজেই সারে না। এর ফলে মানুষ শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং দুর্বলতার সমস্যায় ভুগতে পারে। বিশ্বের পালমোনোলজিস্টরা এই অবস্থা নিয়ে বেশ উদবিঘ্নে রয়েছেন। তাঁদের দাবী, যে ব্যক্তি কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কারণে তিনি ফের শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আবার হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
আরও পড়ুন : করোনা আবহে সুস্থ থাকতে ডায়াবেটিস রোগীরা কী করবেন দেখে নিন
তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যারা করোনার হালকা উপসর্গ দ্বারা আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে ফুসফুসের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু যাদের সংক্রমণ খুব গুরুতর পর্যায়, তাদের ক্ষেত্রে ফুসফুসের এই জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে চলুন জেনে নিন কী এই পালমোনারি ফাইব্রোসিস? জানুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত।
পালমোনারি ফাইব্রোসিস কী?
পালমোনারি ফাইব্রোসিস হল এক ধরনের ফুসফুসের রোগ, যার ফলে ফুসফুসের নরম অংশগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং সেখানে এক ধরনের ক্ষত সৃষ্টি হয়। এই ক্ষত রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাকে কমিয়ে দেয় এবং একজন ব্যক্তিকে সঠিকভাবে শ্বাস নিতে অক্ষম করে তোলে। এতে ফুসফুসের টিস্যুগুলো মোটা ও শক্ত হয়ে যায়, ফলে ফুসফুসে থাকা বায়ুথলিগুলো ঠিকমত কাজ করতে পারে না।
কোভিড-১৯ এবং পালমোনারি ফাইব্রোসিস
কোভিড-১৯ এমন একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ, যা মূলত ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। তবে যে সকল রোগীরা কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন, তার পরেও তারা কীভাবে পালমোনারি ফাইব্রোসিস দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন তার প্রকৃত কারণ এখনও অস্পষ্ট। যাদের আগে থেকেই ফুসফুসের রোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর কারণে হওয়া পালমোনারি ফাইব্রোসিস মৃত্যুর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
পালমোনারি ফাইব্রোসিস হওয়ার কারণ কী?
যখন বায়ুথলি বা অ্যালভিওলাইতে দাগ হওয়ার ফলে বায়ুথলি শক্ত হয়ে যায়, তখন রক্ত প্রবাহে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিকমতো হয় না। তখনই পালমোনারি ফাইব্রোসিস দেখা দেয়। বায়ুথলিতে দাগ হয়ে যাওয়ার কারণগুলি হল -
১) রেডিয়েশন
২) লুপাস এবং রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস এর মত অটোইমিউন ডিসঅর্ডার।
৩) সিলিকা ধূলিকণা, কয়লার ধুলো বা বিষাক্ত ধাতব ও ধুলোর সংস্পর্শে থাকা।
৪) হেপাটাইটিস অথবা হার্পিসের মতো সংক্রমণ।
৫) নিউমোনিয়া এবং ডার্মাটোমায়োসাইটিসের মতো চিকিৎসার ক্ষেত্রে।
৬) তামাক সেবন বা ধূমপান
লক্ষণসমূহ
এই রোগের লক্ষণ সবার ক্ষেত্রে এক হয় না। কিছু লোকের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলি দ্রুত প্রকাশ পায় আবার কিছুজনের ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।
১) শ্বাসকষ্ট (রোগের প্রথম লক্ষণ)
২) অবসাদ
৩) দুর্বলতা
৪) শুকনো কাশি
৫) বুকের চারিদিকে অস্বস্তি
৬) পেশী ব্যথা
৭) নখের ক্লাবিং
রোগের ঝুঁকি
১) পুরুষদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বেশি।
২) ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়সী মানুষদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৩) যারা বিভিন্ন খনি, নির্মাণ শিল্প বা কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৪) কেমোথেরাপির চিকিৎসা।
৬) বংশোদ্ভূত পালমোনারি ফাইব্রোসিসের ইতিহাস রয়েছে এমন লোকেদের।
জটিলতা
পালমোনারি ফাইব্রোসিস রোগীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে দেখা দিতে পারে -
১) ফুসফুসের ক্যান্সার
২) পালমোনারি হাইপারটেনশন
৩) হার্ট ফেলিওর
৪) অন্যান্য রোগের দ্বারা ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ।
রোগ নির্ণয়
বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা, রক্তে অক্সিজেনের স্তর পরীক্ষা, ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা, স্পুটাম-এর নমুনা পরীক্ষা, সিটি স্ক্যান, বায়োপসি, ইত্যাদির মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়।
চিকিৎসা
ডায়াবেটিস বা অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের মত পালমোনারি ফাইব্রোসিসকে সম্পূর্ণ সুস্থ করা যায় না। বিভিন্ন অ্যান্টিফাইব্রোটিক ওষুধ, অক্সিজেন থেরাপি ইত্যাদির মাধ্যমে ফুসফুসের ক্ষতির মাত্রা কমানো যেতে পারে। তবে চিকিৎসার পদ্ধতিগুলি কার্যকর না হলে তখন রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে ফুসফুসের প্রতিস্থাপন করা হয়।
প্রতিরোধের উপায়
১) ধুমপান ত্যাগ করতে হবে
২) যারা খনিতে কাজ করে, কৃষিকাজ, নির্মাণ কাজ, কেমিক্যাল, সিলিকা ডাস্ট বা অন্যান্য ক্ষতিকারক দূষকগুলির সংস্পর্শে থাকেন, তারা শ্বাসযন্ত্রে এগুলি প্রবেশ করা থেকে আটকানোর জন্য সতর্কতা অবলম্বন করুন।
৩) সুষম ডায়েট মেনে চলুন।
৪) নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
৫) অগোছালো জীবনযাত্রার অভ্যাসটি পরিবর্তন করুন।