Just In
Don't Miss
বাড়িতে থেকে কোভিড চিকিৎসা হচ্ছে? মাত্র ছয় মিনিট হাঁটার মাধ্যমেই জানুন আপনার শারীরিক অবস্থা
যতদিন যাচ্ছে, করোনা নিজের রূপ পরিবর্তন করে আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে এবং সংক্রমণ আরও দ্রুত হচ্ছে। দৈনিক লক্ষ লক্ষ মানুষ করোনার শিকার হচ্ছে। করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত এতটাই বাড়ছে যে, হাসপাতালে বেড পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর পাশাপাশি বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদাও, যা চিকিৎসকদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ বাড়াচ্ছে। সংক্রমণের হার কমানোর জন্য প্রতিনিয়ত চিকিৎসক এবং গবেষকেরা কোভিড বিধিগুলি মেনে চলার কথা বলছে। অনেক চিকিৎসক প্রতিটি বাড়িতে একটি করে অক্সিমিটার রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। বিশেষত, যেসব কোভিড রোগীদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা চলছে তাদের ক্ষেত্রে অক্সিমিটার খুবই জরুরি। অক্সিমিটারের সাহায্যে ঘরে বসেই জানা যায় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা সম্পর্কে, ফলে ফুসফুস সম্পর্কেও সংক্ষিপ্ত ধারণা আসে।
করোনা ভাইরাস ফুসফুসে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করছে। তাই যাদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা চলছে তাদেরকে চিকিৎসকরা ৬ মিনিট ওয়াক টেস্ট করানোর কথা বলছেন। এতে আপনি নিজের স্বাস্থ্য ও শরীরের অক্সিজেন লেভেল সম্পর্কে জানতে পারবেন।
কী এই ৬-মিনিট হাঁটার পরীক্ষা?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এই পরীক্ষাটি আপনার ফুসফুস এবং হার্ট কতটা স্বাস্থ্যকর তা পরিমাপ করে। যে ব্যক্তিদের বাড়িতে থেকেই করোনার চিকিৎসা চলছে তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে এই পরীক্ষাটি করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন কোভিড পজিটিভ রোগীর প্রতি ৬ ঘণ্টা অন্তর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কত, তা দেখা দরকার। যদি স্যাচুরেশন লেভেল ৯৫ বা ৯৪ হয়, তবে অবশ্যই আরও কয়েকবার পরীক্ষা করা উচিত।
কীভাবে এই পরীক্ষাটি করবেন?
এটি একটি অতি সাধারণ পরীক্ষা যা আপনি ঘরে বসে করতে পারেন এবং এটি করতে কোনও অর্থ ব্যয় হয় না। প্রথমে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কত, তা দেখুন। এরপর ঘরের মধ্যেই ৬ মিনিট হাঁটুন, তারপর ফের দেখুন অক্সিজেনের মাত্রা। এই পরীক্ষাটি পদ্ধতি হল -
১) আপনার আঙুলের সাথে অক্সিমিটার লাগিয়ে রাখুন।
২) অক্সিমিটার লাগিয়ে চালু রাখা অবস্থায় আপনি ঘরের ভিতরেই ছয় মিনিট হাঁটুন।
৩) ছয় মিনিট হাঁটার সময় এবং হাঁটার পরে অক্সিজেনের লেভেল কতটা তা নোট করুন। ৬০ বছর বা তার উর্ধ্ব রোগীদের জন্য তিন মিনিট হাঁটাই যথেষ্ট।
এই পরীক্ষাটির মাধ্যমে কী বোঝা যায়?
অক্সিজেন লেভেল এক থেকে দুই শতাংশ কমে গেলে চিন্তার কিছু নেই, এক্ষেত্রে ব্যক্তিকে দিনে এক বা দু'বার এক্সারসাইজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পরীক্ষাটি করার সময় যদি ৯৩ শতাংশের নীচে স্যাচুরেশন নেমে যায়, বা আরও তিন শতাংশেরও বেশি ড্রপ হয় কিংবা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তাহলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যাদের হাঁপানি আছে তাদের জন্য এই পরীক্ষাটি নয়। এই পরীক্ষাটি কোন ব্যক্তির অক্সিজেনের ঘাটতি খুব সহজেই সনাক্ত করতে পারে এবং যথা সময়ে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতেও সাহায্য করে।
এই পরীক্ষা করার কিছু টিপস
১) এই পরীক্ষাটি করার সময় অবশ্যই হালকা-পাতলা, আরামদায়ক জামাকাপড় এবং জুতো পরতে হবে।
২) আপনি এই পরীক্ষাটি করার সময় লাঠি বা ওয়াকার এর সাহায্য নিতে পারেন।
৩) হালকা খাবার খাওয়ার পরে এই পরীক্ষাটি করুন।
৪) এই পরীক্ষা করার দু'ঘণ্টার মধ্যে কোনও রকমের শরীরচর্চা করা চলবে না।
এই পরীক্ষাটি কতবার করা উচিত এবং কাদের করা উচিত?
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, করোনা রোগীদের দিনে কমপক্ষে দু'বার এই পরীক্ষাটি করতে হবে। তবে যারা সুস্থ তারাও এই পরীক্ষাটি দিনে দু'বার করতে পারেন। এই পরীক্ষার ফলে আপনি আপনার ফুসফুসের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।
আজকাল অনেকের ক্ষেত্রেই কোভিডের লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায় না, কিন্তু তাদের রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল কমতে দেখা যায়। এই অবস্থাকে হ্যাপি হাইপক্সিয়া বলা হয়। যথাযথ সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিলে এবং রোগীর যত্ন না নিলে, অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর অবস্থা খুব বিপদজনক হয়ে ওঠে।