Just In
- 8 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 10 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 13 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 15 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
Don't Miss
ব্ল্যাক, হোয়াইট নাকি ইয়েলো, কোন ফাঙ্গাস সবচেয়ে বেশি মারাত্মক? এদের মধ্যে পার্থক্য কী? জেনে নিন বিস্তারিত
দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়ানক আকার ধারন করেছে, আর এরই মাঝে একের পর এক নতুন নতুন রোগের উদ্ভব হচ্ছে। ফলে আতঙ্ক কমার বদলে দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই দেখা দিচ্ছে ফাঙ্গাস সংক্রমণ। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাস, ইয়েলো ফাঙ্গাস, পরপর এই তিন ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন মানুষের ভয় আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়েলো ফাঙ্গাস অন্য দুই ফাঙ্গাসের চেয়ে আরও বেশি মারাত্মক।
ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এই তিন ফাঙ্গাসের সংক্রমণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যে এই তিন ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে, এর ফলে মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে বলা হয় মিউকরমাইকোসিস এবং এটি তিন ধরনের হয়। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যে 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস' সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। এটি সাধারণত অনুনাসিক গহ্বর এবং প্যারান্যাসাল সাইনাস-কে প্রভাবিত করে এবং চোখের উপর প্রভাব ফেলে, রোগী অন্ধও হয়ে যেতে পারে এবং সেখান থেকে এটি মস্তিষ্কে প্রসারিত হতে পারে।
আরেক ধরণের মিউকরমাইকোসিস আছে, যা ফুসফুসকে প্রভাবিত করে এর ফলে পালমোনারি মিউকরমাইকোসিস হয়। আর এর তৃতীয় প্রকারটি হল গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল মিউকরমাইকোসিস।
মিউকরমাইকোসিস রক্তনালীকে আক্রমণ করে এবং রক্তনালীতে এই ছত্রাকের সংক্রমণ ছড়াতে থাকলে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে নানা অঙ্গে রোগ ধরে যায়। রক্ত জমাট বাঁধতেও দেখা যায়।
যেসব ডায়াবেটিস রোগীরা কোভিডে আক্রান্ত, যাদের স্টেরয়েড দেওয়া হচ্ছে, তাদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। এটি প্রতিরোধের জন্য অত্যধিক পরিমাণে স্টেরয়েডের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। ফুসফুসে প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে স্টেরয়েড অপরিহার্য, তবে এটি রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে প্রভাব ফেলে এবং ডায়াবেটিস রোগী ও নন-ডায়াবেটিক কোভিড রোগীদের দেহে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
কোনও ব্যক্তির মধ্যে এই সংক্রমণ হলে যে উপসর্গগুলি দেখা দেয় - নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, রক্ত পড়া নাক দিয়ে, মুখে ফোলাভাব, দাঁতে ব্যথা, বুকে ব্যাথা। চোয়ালে ব্যথা, চোখ জ্বালা ও ব্যথা, নাকের চারপাশে ব্যথা ও লালচে ভাব, চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, নাকের উপর কালচে দাগ দেখা দিতে পারে, জ্বর, বুকে ব্যথা, মাথা ব্যথা, কাশি, বমি।
কোভিডের মাঝে ছড়াচ্ছে 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস' সংক্রমণ, কী এই রোগ? জেনে নিন বিস্তারিত
হোয়াইট ফাঙ্গাস
হোয়াইট ফাঙ্গাস ক্যান্ডিডা গ্রুপ-এর অন্তর্গত। এটিও দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত ব্যক্তি বা অন্য কোনও রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিকে বেশি প্রভাবিত করে।
হোয়াইট ফাঙ্গাস খুব দ্রুত দেহের অন্যান্য অঙ্গের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, যেমন - ফুসফুস, লিভার, কিডনি এমনকি যৌনাঙ্গ পর্যন্ত সংক্রমিত হতে পারে। অঙ্গগুলিকে বিকলও করতে পারে। এছাড়াও এটি মস্তিষ্ক, রেসপিরেটরি সিস্টেম এবং পাচন তন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে।
হোয়াইট ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হলে যে লক্ষণগুলি দেখা দেয় - কাশি, জ্বর, ডায়ারিয়া, ফুসফুসে ডার্ক স্পট, অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়া, ফোলা, ব্যথা, অবিরাম মাথা ব্যথা।
white fungus : ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের পর এবার হোয়াইট ফাঙ্গাসের হানা! কতটা ভয়ঙ্কর এই সংক্রমণ?
ইয়েলো ফাঙ্গাস
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংক্রমণটি সাধারণত সরীসৃপদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। হোয়াইট ও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের তুলনায় এটি আরও বেশি মারাত্মক বলে মনে করা হচ্ছে। এটিও প্রাথমিকভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণেই হয়ে থাকে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, দুর্বল স্বাস্থ্যবিধি, খারাপ খাবার এই ফাঙ্গাসের জন্য দায়ী। ইয়েলো ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেহের ভিতরে প্রভাব বিস্তার করে।
এর উপসর্গগুলি হল - অলসতা, ক্লান্তি, খিদে না হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়া, ক্ষত ঠিক হতে দেরি হওয়া, ইত্যাদি।
ব্ল্যাক ও হোয়াইটের থেকেও ভয়াবহ ইয়েলো ফাঙ্গাস! কী থেকে ছড়াচ্ছে এই রোগ? জানুন এর উপসর্গ
ব্ল্যাক, হোয়াইট, ইয়েলো ফাঙ্গাসের চিকিৎসা
১) ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীদের ENT বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এমআরআই করানো যেতে পারে। Amphotericin এবং Bisavaconazole, এই ওষুধগুলিই সাধারণত ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগীদের দেওয়া হয়ে থাকে। রোগীর দেহে সংক্রমণ কতদূর ছড়িয়েছে তার উপর নির্ভর করে চিকিৎসক সার্জারিও করতে পারেন।
২) হোয়াইট ফাঙ্গাস সাধারণত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ দিয়ে সারানো যেতে পারে। ডায়াবেটিসের সাথে এটির সরাসরি কোনও সংযোগ নেই, তবে ডায়াবেটিস বেশিরভাগ সংক্রমণ আরও বাড়িয়ে তোলে।
৩) ইয়েলো ফাঙ্গাসের একমাত্র চিকিৎসা হল Amphotericin B injection, এটি একটি অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ যা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসার ক্ষেত্রেও জন্যও ব্যবহৃত হয়।
এই তিন ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধের উপায়
ছত্রাকের সংক্রমণ সাধারণত খারাপ হাইজিনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বা স্বাস্থ্যকর থাকাটা খুবই জরুরি। আপনার চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে পচা, নষ্ট বা বাসি খাবার ঘরে রাখবেন না, ফেলে দিন। ডাস্টবিন প্রতিদিন ফেলে দিন।
বাড়ির আর্দ্রতাও এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অতিরিক্ত আর্দ্রতা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বৃদ্ধির পক্ষে উপযুক্ত পরিবেশ। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত আর্দ্রতা সঠিক। হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলি পরিষ্কার রাখা, ভেন্টিলেটর / অক্সিজেন সিলিন্ডার যথাযথ স্যানিটাইজ করা, ছত্রাকের আক্রমণ প্রতিরোধের সেরা উপায়।