Just In
কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত পান করুন এই ৮ পানীয়!
কোলেস্টেরল হল এক ধরনের ফ্যাট জাতীয় পদার্থ, যা মূলত রক্তে এবং শরীরের কোষে উপস্থিত থাকে। এটি কোষ, টিস্যু এবং অঙ্গ তৈরির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এছাড়া কোলেস্টেরল হরমোন, ভিটামিন-ডি এবং পিত্ত রস তৈরির ক্ষেত্রেও অন্যতম ভূমিকা পালন করে। কোলেস্টেরল দুই রকমের হয় - HDL নামক ভাল কোলেস্টেরল এবং LDL ও গ্লিসারাইডস নামক খারাপ কোলেস্টেরল।
শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে, ধমনীতে ফ্যাট জমতে শুরু করে, যার ফলে হার্টে রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাহলে আসুন দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন পানীয় কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
১) টমেটোর জুস
টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন বর্তমান, যা এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। তাছাড়া, টমেটোতে নিয়াসিন এবং কোলেস্টেরল-হ্রাসকারী ফাইবারও বর্তমান। গবেষণায় দেখা গেছে, টানা দু'মাস প্রতিদিন ২৮০ মিলি টমেটোর জুস পান করলে, এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে পারে।
২) কোকো ড্রিঙ্কস
কোকোতে ফ্ল্যাভানল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বর্তমান, যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। কোকো হল ডার্ক চকোলেটের প্রধান উপাদান, এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সহায়তা করে। সাধারণত দিনে দু'বার, ৪৫০ মিলিগ্রাম কোকোর সেবন, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত সহায়ক। তবে প্রক্রিয়াজাত চকোলেটের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে উচ্চ মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।
৩) গ্রিন টি
গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের দুর্দান্ত উৎস। গ্রিন টি-তে catechins এবং epigallocatechin gallates রয়েছে। গ্রিন টি এর সেবন, এলডিএল (LDL) এবং মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে অত্যন্ত সহায়ক।
৪) সয়া মিল্ক
সয়া মিল্কে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা কম থাকে। তাই সাধারণ দুধের পরিবর্তে নিয়মিত সয়া দুধের সেবন, শরীরে কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাসোসিয়েশন (FDA) এর মতে, প্রতিদিন কম মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ২৫ গ্রাম সয়া প্রোটিনযুক্ত ডায়েটের পরামর্শ দেওয়া হয়।
৫) মাদক
পরিমিত মদ্যপান রক্তে HDL মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষ করে রেড ওয়াইন। রেড ওয়াইনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য বর্তমান। গবেষণায় দেখা গেছে যে, রেড ওয়াইনের পরিমিত সেবন, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর সাথে সাথে, হৃদরোগ প্রতিরোধ করতেও সহায়ক। তবে অতিরিক্ত মদ্যপানের ফল কিন্তু শরীরের উপর বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে। এতে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
৬) ওট মিল্ক
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ক্ষেত্রে, ওট মিল্ক অত্যন্ত উপকারি। এতে বিটা-গ্লুক্যান নামক পদার্থ বর্তমান। এটি পিত্ত লবণের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে এবং অন্ত্রের মধ্যে জেলের মতো স্তর তৈরি করে, যা কোলেস্টেরলের শোষণ কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ ওট মিল্ক ১.৩ গ্রাম বিটা-গ্লুক্যান সরবরাহ করতে পারে।
৭) সাইট্রাস ফলের রস
সাইট্রাস ফলের রস দুর্দান্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-বুস্টার হিসেবে কাজ করে। এটি হার্টের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখার সাথে সাথে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করতেও অত্যন্ত সহায়ক। আপনি এক গ্লাস জলে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
৮) বেরি স্মুদি
বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবারের উৎস, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত সহায়ক, যেমন - স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি, ব্লুবেরি এবং ব্ল্যাকবেরি। প্রতিদিন লো ফ্যাট দুধের সাথে, এক মুঠো বেরি দিয়ে তৈরি শেক পান করলে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে।