For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

হলুদ মেশানো দুধে কি আছে জানেন?

By Swaity Das
|

ভারতীয় যে কোনও রান্নাতেই হলুদের ব্যবহার করা যায়। যার ফলে রান্নার স্বাদ, গন্ধ এবং বর্ণ এক স্বর্গীয় মাত্রা লাভ করে। শুধু কি তাই? হলুদের বাকি গুণগুলোর কথা না বললে অজানা থেকে যাবে ভারতের এক বিশাল খাদ্য- ইতিহাস এবং তার চিকিৎসা পদ্ধতি। আমার অনেকেই আছে, যারা সকালে ঘুম থেকে উঠে কাঁচা হলুদ খাই, যে কোনও কারণে আঘাত পেলে হলুদ দুধ পান করি। কিন্তু ঠিক কী কারণে সেই প্রাচীনকাল থেকে আমরা এগুলি মেনে চলেছি? আর এর ফলে কি ধরণের উপকারিতা আমরা লাভ করি, এই সব কিছুর উত্তর নিয়েই আজকের বোল্ডস্কাইয়ের বিশেষ প্রতিবেদন।

১. মেদ ঝরাতে সাহায্য করে:

১. মেদ ঝরাতে সাহায্য করে:

আমাদের শরীরে দুই ধরণের ফ্যাট জমা হয়। এক, ব্রাউন বা বাদামি ফ্যাট, অর্থাৎ যা কিনা পরিশ্রমের মাধ্যমে সহজেই গলে যায়। দুই, হোয়াইট বা সাদা ফ্যাট, যা ভবিষ্যতের জন্য শরীরেই জমা হয়ে থাকে। মূলত ফ্যাট যে সবসময়ই খারাপ তা কিন্তু নয়। আমাদের শরীরে যে ধরণের ফ্যাট থাকে, তার ভাল এবং খারাপ দুই ধরণের দিকই রয়েছে। তবে আপনার ওজন যদি অনেকটাই বেশি হয়, তাহলে ফ্যাট আপনার শরীরে খারাপ প্রভাব দ্রুতহারে বিস্তার করবে। আর এই ফ্যাট যেহেতু শরীরের অন্যান্য টিস্যুগুলির মতোই হয়, তাই এগুলিও আপনার শরীরের থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করতে চাইবে। আর ঠিক তখনই এই অক্সিজেন এই ধরণের খারাপ ফ্যাটকে বৃদ্ধি হতে সাহায্য করবে। আর ঠিক এখানেই জাদুর মতো কাজ করতে পারে হলুদ। হলুদের মধ্যে যে উপাদান থাকে, তার নাম কারকুমিন। এই কারকুমিন সাদা ফ্যাটের মধ্যে রক্ত ধমনীর বিকাশকে প্রতিহত করতে পারে। ফলে, আমাদের শরীর এই ধরণের খারাপ ফ্যাটের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে।

২. ওজন কমাতে সাহায্য করে:

২. ওজন কমাতে সাহায্য করে:

আপনি নিজের ওজন কমাতে চাইছেন। অন্যদিকে, আপনার খাদ্য়গ্রহণ পদ্ধতি একেবারেই ভাল নয় বা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আর ঠিক এই কারণেই দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে আপনার নিয়মিত পান করা উচিত। কারণ আপনি যদি কোনও কারণে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ নাও করতে পারেন, তাও শুধুমাত্র হলুদ দুধের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। তবে, নিয়মিত হারে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে যাবেন না যেন!

৩. সাদা ফ্যাটকে বাদামি ফ্যাটে রূপান্তরিত করে:

৩. সাদা ফ্যাটকে বাদামি ফ্যাটে রূপান্তরিত করে:

হলুদ আমাদের শরীরে নোরপাইনফ্রিন লেভেল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা সাদা ফ্যাটকে বাদামি ফ্যাটে রূপান্তরিত করে। আসলে হলুদ, খারাপ মেদ গলিয়ে দিতে সাহায্য করে এবং সার্বিক দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি করে।

৪. শরীরে উৎসেচক এবং থার্মোজেনেসিসের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে:

৪. শরীরে উৎসেচক এবং থার্মোজেনেসিসের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে:

প্রতিদিন কত পরিমাণ এনার্জি আমাদের কাজে ব্যবহৃত হয়, তারই মাত্রা নির্ধারণ করতে পারে থার্মোজেনেসিস। এই থার্মোজেনেসিস উৎসেচকের সঙ্গে সম্পর্কিত। আসলে আমরা যত পরিমান এনার্জি খরচ করবো, তত বেশী পরিমাণে উৎসেচক আমাদের শরীরে তৈরি হবে। এর ফলে অতিরিক্ত ফ্যাট গলে গিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।

৫. প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে:

৫. প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে:

ওজন বৃদ্ধি হলে প্রদাহজনিত নানারকম সমস্যা দেখা যায়। এর ফলে ফ্যাট আমাদের শরীরে অ্যাডিপকিন্স তৈরি করতে পারে। এই অ্যাডিপকিন্সগুলি হল, আইএল-সিক্স এবং টিএনএফ-এ। এই দুই অ্যাডিপকিন্স শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যার সৃষ্টি করে। এই ধরণের সমস্যায় হলুদ দারুণ কাজ দেয়। হলুদ এই অ্যাডিপকিন্সগুলিকে নষ্ট করে এবং শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে।

৬. ডায়াবেটিস রোধ করতে পারে:

৬. ডায়াবেটিস রোধ করতে পারে:

দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিক থাকে। কারণ এই পানীয়টি ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এইভাবেই, হলুদ ডায়াবেটিসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।

৭. মেটাবলিক সিন্ড্রোমের আশঙ্কা দূর করে:

৭. মেটাবলিক সিন্ড্রোমের আশঙ্কা দূর করে:

কারও শরীরে মেটাবলিক সিন্ড্রোমের কোনও সূচনা দেখা দিলে তার তৎক্ষণাৎ হলুদের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এর কারণ হল, এই রোগের কারণে শরীরে নানা ধরণের সমস্যা দেখা যায়। যেমন, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া, কোলেস্টেরল, রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া এবং মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি, যা কিনা হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। যদিও, নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধের ব্যবহারে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে।

৮. দুশ্চিন্তার হাত থেকে মুক্তি দেয়:

৮. দুশ্চিন্তার হাত থেকে মুক্তি দেয়:

ওজন বৃদ্ধি এবং দুশ্চিন্তার কবলে পড়ে অসুস্থ হওয়া আসলে একই পয়সার দুই পিঠ। সমীক্ষায় দেখে গেছে, এই দুই ধরণের সমস্যাতেই প্রদাহজনিত সমস্যা, ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়া এবং হরমোনের সমস্যা দেখা দেয়। যদিও, এই ধরণের সমস্যায় দারুণ কাজ দেয় হলুদ। কারণ হলুদ দুধ পান করার পর মস্তিষ্কের অন্দরে সেরোটোনিন এবং ডোপামাইন নিঃসরণ হতে শুরু করে। ফলে এটি আমাদের মানসিক প্রফুল্লতা এবং দৃঢ়তা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৯. ফোলাভাব দূর করতে সাহায্য করে:

৯. ফোলাভাব দূর করতে সাহায্য করে:

অনেক সময়ই আমরা পরে গিয়ে আঘাত পাই এবং ক্ষতস্থান ফুলে যায় এবং ব্যাথা হয়। এই ধরণের আঘাত এবং যন্ত্রণা আমাদের শরীরের জন্য খুবই খারাপ। যদিও আঘাত পাওয়ার পরেই হলুদ দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে ফোলাভাব কমে যায় এবং ব্যাথার থেকে মুক্তি মেলে।

১০. জীবাণুনাশক:

১০. জীবাণুনাশক:

হলুদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জীবাণুনাশক গুণ রয়েছে। শরীরের কোনও অংশ কেটে গেলে বা আঘাত পেলে সেই জায়গায় হলুদ ব্যবহার করলে জীবাণু নাশ হয়। ফলে ক্ষতস্থানে কোনও সমস্যা হয় না।

১১. ত্বকের যত্নে কার্যকরী:

১১. ত্বকের যত্নে কার্যকরী:

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের নানা সমস্যা শুরু হয়। এছাড়াও লাগামহীন দূষণের কারণে ত্বক একেবারে প্রাণহীন হয়ে পরে। সেই সঙ্গে ত্বকের আরও সব সমস্যা, যেমন- বলিরেখা, ভাজ পড়ে যাওয়া, ব্রণ প্রভৃতির চিকিৎসায় হলুদের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, হলুদ ত্বকের নানা দাগ এবং ছোপ দূরে রেখে ত্বককে উজ্জীবিত করে তোলে এবং ত্বককে ভিতর থেকে ভাল রাখে।

১২. সর্দি কাশির হাত থেকে রক্ষা করে:

১২. সর্দি কাশির হাত থেকে রক্ষা করে:

সর্দি কাশি তো ঘরে ঘরে লেগেই থাকে। আর তা যদি হয় ঋতু পরিবর্তনের সময়, তাহলে তো কথাই নেই। এই সময় দুধের মধ্যে হলুদ মিশিয়ে খেলে জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি দ্রুত সারে। এমনকি, হলুদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জীবাণুনাশক এবং প্রদাহজনিত সমস্যা নিবারণের উপাদান বজায় থাকায় এটি আমাদের সর্দি কাশি থেকে অনেকটাই দূরে রাখে।

১৩. ব্যাথা নিবারণ করে:

১৩. ব্যাথা নিবারণ করে:

শরীরের কোথাও আঘাত লাগলে আমরা তৎক্ষণাৎ হলুদ মেশানো দুধ পান করি। এর কারণ হল হলুদের মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি যন্ত্রণা নিবারণ করার ক্ষমতা রয়েছে। হলুদ মেশানো দুধ পান করার সঙ্গে সঙ্গে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিস এবং ইন্টারলিউকিন্সের মাত্রা কমতে শুরু করে, যা ব্যাথা নিবারণ করতে পারে।

১৪. হজমে সাহায্য করে:

১৪. হজমে সাহায্য করে:

হলুদের আরেকটি গুণ রয়েছে। তা হল, এই প্রকৃতিক উপাদানটি খাবার হজমে সাহায্য করে এবং পেটের সমস্যা রোধ করে। এরফলে গ্যাস, অম্বল, বুক জ্বালা ইত্যাদি কমে যেতে শুরু করে।

১৫. হাড়ের যত্নে কাজ দেয়:

১৫. হাড়ের যত্নে কাজ দেয়:

দুধ পান করা হড়ের জন্য খুবই উপকারি। আর যদি তা হয়, হলুদ মেশানো দুধ, তাহলে তো কথাই নেই। কারণ হলুদ দুধ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়িয়ে তোলে, তেমনই হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা হাড়ের যে কোনও সমস্যা কমাতে দারুণ কাজ দেয়।

English summary

আমার অনেকেই আছে, যারা সকালে ঘুম থেকে উঠে কাঁচা হলুদ খাই, যে কোনও কারণে আঘাত পেলে হলুদ দুধ পান করি। কিন্তু ঠিক কারণে সেই প্রাচীনকাল থেকে আমরা এগুলি মেনে চলেছি?

The rest of the world is just catching up to what the ancient Indians have always known about turmeric. No wonder Indian food is considered incomplete without a healthy dash of this yellow spice. And Indian home remedies considered incomplete without a glass of turmeric milk.
Story first published: Thursday, October 26, 2017, 17:03 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion