Just In
রূপটানের জন্য আদার বিস্ময়কর ব্যবহার যা আপনাকে আজই ট্রাই করতে হবে!
পেট খারাপ থেকে, সর্দি-জ্বর, যে কোন শরীর খারাপ সংক্রান্ত কারণই হোক না কেন, আদা এমন একটি উপাদান যার দিকে তখন আমরা হাত বাড়াই। এখন আমরা যদি বলি, এই একই আদা, কদর্য ব্রণ, বহু পুরানো ক্ষতের দাগ এবং এমনকি জেদী সেলুলাইটস এর দেখভালও করতে পারে?
হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন, রূপটানের জন্য আদার প্রভাবশালী ব্যবহার, এই র্যাডারের নিচেই উড়ে বেরাচ্ছে।
আদায় প্রায় ৪০ রকমের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা দেহ থেকে টক্সিন পদার্থকে দূর করতে, শরীরে রক্তের সঞ্চালন উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, পর্যায়ক্রমে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতার উন্নতি ঘটিয়ে একে টানটান ও কোমল করে।
উচ্চ অ্যান্ট-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যে পূর্ণ, আদা, প্রানবন্ত ও উদ্দীপিত করে যা ত্বকের দাগ-ছোপকে হাল্কা করে ও ব্রুণও দূর করে।
এছাড়াও আদা একটি শক্তিশালী কামোদ্দীপক (aphrodisiac), অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং টোনার যা ত্বকের দূষিত পদার্থগুলিকে পরিস্কার করে, ব্যাকটিরিয়া ঘটিত সংক্রমণকে বিনাশ করে, রোমকূপের সংকোচন করে এবং ত্বকে একটি ঔজ্জ্বলতা আনে।
যদি আপনি ভেবে থাকেন, আদার উপকারিতা কেবলমাত্র ত্বকের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ, তবে আরো একবার ভাবুন। আদায় উপস্থিত ফ্যাটি অ্যাসিড, স্কাল্পে রক্তের স্পঞ্চালণকে উদ্দীপিত করে, নতুন হেয়ার ফলিকল গজাতে উৎসাহিত করে এবং চুলের ভেঙে যাওয়া আটকায়।
তাহলে, আপনি আর কিসের জন্য অপেক্ষা করছেন? এখানে রইল কিছু আশ্চর্যজনক অথচ সহজ আদার মাস্ক, যেগুলির জন্য আপনি আমাদের ধন্যবাদ জানাবেন।
ক্ষতের দাগ হাল্কা করে
একটি আদাকে ছুলে, কেটে ও ঘষে রস বের করে নিন। ঠান্ডা করতে কিছুক্ষণের জন্য রেফ্রিজেরেটরে রেখে দিন। প্রভাবিত এলাকায় নির্যাসটি লাগান। ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলার আগে, ত্বককে নির্যাসটি শুষে নিতে দিন। ক্ষতের দাগ হাল্কা করতে দিনে কমপক্ষে দুইবার আদার এই নির্যাসটি লাগান এবং ৬ সপ্তাহ বা তারও কম সময়ের মধ্যেই আপনি তফাৎ দেখতে পাবেন।
ব্রণের জন্য মাস্ক
১ চা চামচ আদার গুড়োর সাথে, ১ চা চামচ মধু ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশান। যতক্ষণ না একতা মসৃণ পেস্ট পাচ্ছেন ততক্ষন মিশ্রণটিকে মেশান। ব্রণ প্রভাবিত এলাকায় মিশ্রণটি লাগান। ৩০ মিনিট ঐভাবেই থাকতে দিন। একবার শুকিয়ে গেলে, ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণকে সম্পূর্ণভাবে সারিয়ে ফেলতে সপ্তাহে একবার এটি করুন।
উজ্জ্বলতা বর্ধক মাস্ক
১ চা চামচ সদ্য নির্যাসিত আদার রস নিন, ২ টেবিল চামচ গোলাপ জলে ও ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে মেশান। সব উপকরণ ভালভাবে মিশে যাওয়া পর্যন্ত মেশাতে থাকুন। আপনার মুখ ও গলায় সমান ভাবে একটা কোট লাগান। ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলার আগে, আদার এই ভেষজ মাস্কটিকে ২০ মিনিটের জন্য থাকতে দিন।
ডিটক্স স্নান
কিছু কিছু পেশিকে রিল্যাক্স করতে ও শরীরে রক্ত প্রবাহ উদ্দীপিত করতে, এই সুপার-থেরাপিউটিক ডিটক্স (Detox) স্নানটি ট্রাই করুন। হাল্কা গরম স্নানের জলের সাথে, হাফ কাপ এপসম সল্ট ও দুই টেবিল চামচ আদা গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। আপনার প্রতিদিনের স্নানে যাওয়ার আগে, নিজেকে ঐ জলে ভিজিয়ে রাখুন যতক্ষণ না পেশিকে শিথিল হতে আপনি সচক্ষে দেখতে পারছেন।
বডি স্ক্রাব
২ টেবিল চামচ ওলিভ অয়েল, সমপরিমান চিনি, ২ টেবিল চামচ আদা বাটা এবং কয়েক ফোঁটা লেমন ওয়েল নিন। মেশাতে থাকুন যতক্ষণ না আপনি একটি দানাদার পেস্ট পাচ্ছেন। শরীরকে সামান্য ভিজিয়ে নিয়ে, সার্কুলার মোশনে ঐ মিশ্রণটিকে মাসাজ করতে থাকুন। পায়ের থেকে শুরু করে গলা পর্যন্ত মাসাজ করুন। ঠান্ডা জলে ধুয়ে নেওয়ার আগে, ১০-১৫ মিনিট ধরে এই মাসাজ করুন।
চুলের বৃদ্ধির জন্য তেল
আধা কাপ জোজোবা তেলের সাথে ২ টেবিল চামচ আদার রস মেশান। ১-২ মিনিটের জন্য তেলটিকে গরম করে নিন। ত্বকে সহ্য করার মতো অবস্থা পর্যন্ত তেলটিকে ঠান্ডা করে নিন। এই হাল্কা গরম তেলটিকে আপনার স্কাল্পে মাসাজ করুন। তেলকে ভালভাবে শুষে নিতে ও রক্ত সঞ্চালিত করতে, আপনার আঙুলের নরম ডগা দিয়ে সার্কুলার মোশনে মাসাজ করুন। সারারাত থাকতে দিন। সকালে হাল্কা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুলের বৃদ্ধির জন্য, সপ্তাহে কমপক্ষে একবার আদা ব্যবহার করুন।
সেলুলাইট (cellulite) মাস্ক
১ কাপ আমন্ড ওয়েল, ২ টেবিল চামচ আদা বাটা ও ১ টেবিল চামচ দারচিনি গুঁড়ো নিন। আপনার চাহিদা অনুযায়ী উপাদানগুলির পরিমান ঠিকঠাক করে নিন। ভালভাবে মিশ্রণটি মিশে যাওয়া পর্যন্ত মেশাতে থাকুন। সেলুলাইট প্রভাবিত এলাকায় সার্কুলার মোশনে মাসাজ করুন। ২০ মিনিট এই অবস্থায় রাখুন ও পরে ধুয়ে ফেলুন।
যদি আপনার কাছে ত্বকের জন্য আদা ব্যবহার করার আরো কিছু টিপস থেকে থাকে, তবে তা নিচের মন্তব্য বিভাগে লিখে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।