Just In
পায়ের শুকনো ও খসখসে চামড়ার চিকিৎসায় ঘরোয়া প্রতিকার
শুকনো ত্বক সাধারণত খসখসে ও অস্বস্তিকর হতে পারে, অতএব এই সমস্যাটির দ্রুত সমাধান প্রয়োজন| কি ভাবে এই অস্বস্তি থেকে দ্রুত রেহাই পাবেন জানতে চান, তাহলে এই প্রতিবেদনটি অবশই পড়ে ফেলুন|
পায়ে শুষ্ক ত্বকের জন্য প্রায়শই মানুষ চুলকানি ও জ্বালা অনুভব করে থাকে| আপনি যদি ছোট প্যান্ট বা আঁটোসাঁটো জিন্স পরেন, তবে আপনার পা সবসময়ই চুলকাতে থাকবে| পায়ে শুষ্ক ত্বক যাদের তারা সবসময় পূর্ণ দৈর্ঘ্য কাপড় পরতে পছন্দ করে, কারণ এই ভাবে UVরে থেকে সরাসরি ক্ষতি প্রতিরোধ করা যায়|
শুকনো ত্বক আসলে মরা চামড়ার কোষের স্তর যা চামড়ার ওপরের অংশে অনেকদিন ধরে জমা হয়| ত্বক অনেকদিন পরিষ্কার না করলে এই কোষের স্তর জমতেই থাকে|
এখানে আমরা কিভাবে আপনার শুষ্ক এবং খসখসে চামড়ার যত্ন নেবেন তার প্রতিকারের কথা আলোচনা করা হল|
১. জলপাইয়ের তেল
জলপাইয়ের তেল সেরা প্রতিকারের মধ্যে একটি, যা পায়ের শুকনো চামড়ার চিকিৎসা করতে পারে| জলপাই তেলে উচ্চ পরিমাণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন পাওয়া যায় যা দীর্ঘক্ষণ আপনার পায়ের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে|
ব্যবহার পদ্ধতি
স্নানে যাওয়ার আগে কিছুটা জলপাইয়ের তেল পায়ে মেখে নিন| ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং তারপর ধুয়ে ফেলুন। আপনার নিয়মিত ময়শ্চারাইজার বা ক্রিম প্রয়োগ করার আগেও আপনি আপনার পায়ে কিছুটা জলপাইয়ের তেল মালিশ করে নিতে পারেন|
২. দই এবং মধুর মাস্ক
দই এবং মধুর মাস্ক আরেকটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার যা পায়ের শুষ্ক চামড়া নিরাময় করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটিতে ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে যা ত্বক শুকিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী, সমস্ত ব্যাকটেরিয়াগুলিকে হত্যা করতে সহায়তা করে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
অর্ধেক কাপ দই নিয়ে নিন এবং কিছু মধু যোগ করুন। একসঙ্গে উপাদানগুলি মিশ্রিত করুন এবং আপনার পায়ে প্রয়োগ করুন। কিছু সময় অপেক্ষা করে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন|
৩. দুধের ক্রিম
ল্যাকটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ দুধের ক্রিম শুষ্ক ও নির্জীব ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরী| এটিও আপনার ত্বককে দীর্ঘক্ষণ আদ্র রাখে|
ব্যবহার পদ্ধতি:
দুই চামচ দুধের ক্রিম নিন এবং এতে কিছু বেসন যোগ করুন| একসাথে উপাদানগুলি মেশান এবং মাস্কটি পায়ে সমান ভাবে লাগিয়ে নিন| কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
৪. মোম ও মধুর মাস্ক
মোম ও মধুতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আদ্রতা বজায় রাখার বৈশিষ্ট্য আছে যা সারা বছর আপনার পায়ের ত্বককে নমনীয় করে রাখে|
ব্যবহার পদ্ধতি:
কিছু মোম, মধু এবং জলপাই তেল নিন| মোমটি গলিয়ে নিয়ে মধু ও জলপাই তেলের সাথে মেশান| আপনার পায়ে এই মিশ্রণটি প্রয়োগ করুন এবং কিছু পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
৫. নারকেল তেল
নারকেল তেলে প্রচুর পরিমানে ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় আর তাই এটি আপনার ত্বককে হাইড্রেট করে, আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে|
ব্যবহার পদ্ধতি:
কিছুটা নারকেল তেল নিন এবং আপনার পায়ে একটি পুরু স্তর প্রয়োগ করুন। অন্তত একটি ঘন্টা অপেক্ষা করুন এবং ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন| আরেকটি উপায় হল নারকেল তেল এবং জলপাই তেল গরম করে পায়ে ম্যাসাজ করে নিন| পরে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন|
৬. আভাকাডো
শুষ্ক ত্বকের নিরাময়ের জন্য আভোকাডোর ব্যবহার হল সবচেয়ে সহজ উপায়| আভাকাডোতে ফ্যাটযুক্ত অ্যাসিড এবং ভিটামিনের উচ্চ পরিমাণ রয়েছে যা শুষ্কতা কার্যকরভাবে চিকিৎসা করতে সহায়তা করে।
ব্যবহার করার পদ্ধতি:
আভাকাডো চটকে তাতে দুধ ও মধু মিশিয়ে নিন| একসঙ্গে সব উপাদান ভাল করে মিশিয়ে পায়ে লাগান| এক ঘন্টার জন্য অপেক্ষা করুন এবং ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
৭. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার আরেকটি হাইড্রেটিং উপাদান যা পায়ে শুকনো এবং খসখসে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সহায়তা করে। অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে ম্যালিক অ্যাসিড থাকার কারণে এটি আপনার ত্বককে গভীর ভাবে পরিষ্কার করে এবং এইভাবে ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে।
ব্যবহার করার পদ্ধতি:
আধা কাপ আপেল সিডার ভিনেগার এক বালতি জলে ঢালুন| এবার ১৫ মিনিটের জন্য এই জলে আপনার পা দুটি ডুবিয়ে রাখুন| কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
৮. নারকেল চিনির স্ক্র্যাব
এটি একটি সহজ ঘরোয়া প্রতিকার যা পায়ের শুষ্কতা কমাতে পারে| একদিকে ব্রাউন সুগার আপনার ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার করে, অন্যদিকে নারকেল তেল আপনার পায়ের আদ্রতা বজায় রাখে|
ব্যবহার পদ্ধতি:
১/৪ কাপ ব্রাউন সুগারের সাথে কিছুটা নারকেল তেল যোগ করুন। কিছু লেবু রস যোগ করে মিশ্রণটি স্ক্র্যাব হিসেবে পায়ে মালিশ করুন এবং জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন|