Just In
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা? ঘরোয়া উপায়েই মিলবে মুক্তি! জানুন কী করবেন
অনেকেই তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় ভোগেন। সারাক্ষণ তেল চিটচিটে ত্বকে ধুলো-বালি জমে ব্রণ, ফুসকুড়ির সমস্যা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই তৈলাক্ত ত্বকের থেকে মুক্তি পেতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি। তবুও অনেক সময় মনের মতো ফল মেলে না।
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অনেকেই দিনে তিন-চারবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোওয়া, ফেস প্যাক-মাস্কের ব্যবহার বা স্ক্রাব করে থাকেন। কিন্তু তাতেও সমস্যা থেকেই যায়! তবে কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে সহজেই তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে! জেনে নিন কী করবেন।
১) ভাল করে মুখ ধুয়ে নিন
একেবারে হালকা গরম জল এবং ক্লিনজার দিয়ে ভাল করে মুখ ধোওয়ার অভ্যাস করুন। এই প্রক্রিয়াটি ত্বকের পিএইচ ভারসাম্যতা বজায় রাখার পাশাপাশি, ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও অত্যন্ত সহায়ক। তবে দিনে দু'বারের বেশি কখনই ক্লিনজার ব্যবহার করবেন না। তাছাড়া, শক্তিশালী সুগন্ধি বা ময়শ্চারাইজারযুক্ত সাবান ব্যবহার করাও এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি আপনার ত্বকে আরও বেশি তেল উৎপাদন করতে পারে। যার ফলে ত্বক আরও বেশি তৈলাক্ত হয়ে ওঠে।
স্যালিসিলিক অ্যাসিড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড কিংবা বেনজয়েল পারঅক্সাইড যুক্ত অ্যান্টি-অ্যাকনি প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন, এগুলি তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে।
২) মধু
ত্বক সংক্রান্ত প্রায় সমস্ত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেই মধু অত্যন্ত কার্যকরী। মধু কেবলমাত্র শুষ্ক ত্বকের জন্য নয়, তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রেও দুর্দান্ত কার্যকর। মধু ত্বককে হাইড্রেট করে এবং প্রাকৃতিকভাবে তেলের নিঃসরণ কমায়। এর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি ব্রণ-পিম্পলের সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে।
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পেতে, ২-৩ চা চামচ মধু নিয়ে আঙুলের সাহায্যে গোটা মুখে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। ২০-৩০ মিনিট রেখে, তারপর জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। মধুর ব্যবহারের আগে হাত ভালভাবে পরিষ্কার করে নেবেন। প্রতিদিন একবার করে এটা করতে পারেন।
৩) ওটমিল
তৈলাক্ত ত্বক থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে মুক্তি পেতে ওটমিল দুর্দান্ত কাজ করে। ওটমিল একটি শক্তিশালী অতিবেগুনী শোষণকারী, যা আপনার ত্বককে সূর্য থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়াও, এটি ময়শ্চারাইজিং, ক্লিনজিং এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট। ওটমিল আপনার ত্বককে অত্যধিক সেবাম উৎপাদন থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, এইভাবে ব্রণ প্রতিরোধ করে। এটি লালচে ভাব এবং জ্বালাও কমায়।
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পেতে, প্রথমে ১/২ টেবিল চামচ ওটসের গুঁড়ো নিন। তাতে সামান্য পরিমাণে জল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এরপর এই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর নর্মাল জল দিয়ে ভাল করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন একবার করতে পারেন।
৪) টমেটো
স্যালিসিলিক অ্যাসিড-যুক্ত টমেটো, ব্রণের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত সহায়ক। টমেটো ত্বকের অতিরিক্ত তেলও শোষণ করে, ত্বকের ছিদ্রগুলিকে খুলে দেয়।
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পেতে, তাজা টমেটোর একটা টুকরো নিয়ে বৃত্তাকার গতিতে ত্বকে ঘষুন। এছাড়াও, দানাওয়ালা চিনির সঙ্গে টমেটোর পাল্প মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে, যদি মুখে লাগানোর পর জ্বালা করতে শুরু করে, তাহলে অবিলম্বে ধুয়ে ফেলবেন।
৫) আমন্ড
বাদাম ত্বককে এক্সফোলিয়েট করা ছাড়াও, ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং অমেধ্য দূর করতেও অত্যন্ত সহায়ক।
এই প্রক্রিয়াটি করতে, তিন চা চামচ আমন্ডের গুঁড়ো এবং দুই চামচ মধু ভাল করে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর ওই পেস্টটি সারা মুখে লাগিয়ে বৃত্তাকার গতিতে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ভাল করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৬) লেবু
লেবু সাইট্রিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। লেবুতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে।
২ চা চামচ লেবুর রস, ২ চা চামচ জল, ১ চা চামচ গ্লিসারিন নিয়ে ভাল করে মেশান। এবার তাতে তুলো ভিজিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে ১-২ বার এটি করতে পারেন। আপনার সেনসিটিভ স্কিন হলে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন।