Just In
বলিউড অভিনেতাদের ভূত দেখার অভিজ্ঞতা শুনলে আপনারও লোম খাঁড়া হয়ে যাবে!
হঠাৎই এক রাতে বারুণ তার রুমে কাউকে গান গাইতে শোনেন। মনের ভুল ভেবে প্রথমটায় সেভাবে গুরুত্ব না দিলেও রাত যত বাড়তে থাকে, তত বারুন স্পষ্ট শুনতে পান পুরুষ কন্ঠে কেউ গান গাইছে।
ভূত বিশ্বাস করেন কী করেন না, সে তো পরের প্রশ্ন। কিন্তু বলিউডের প্রথম সারির বেশ কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভূত দেখার অভিজ্ঞতা শুনলে রাতের বেলা যে আর একা একা আর বাথরুমে যেতে পারবেন না, সে কথা হলফ করে বলতে পারি।
নানা জায়গায় শুটিং করতে গিয়ে অভিনেতাদের বেশ আজব রকমের সব অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে। কিন্তু ভূত দেখা মোটেও সহজ কাজ নয়, তা সে পর্দার হিরো হোক কি সাধারণ মানুষ, সবারই এমন পরিস্থিতিতে আত্মারাম খাঁচা হয়ে যায়। আর এমন মুহূর্তে হিরোদের পক্ষেও মন শক্ত রাখা সহজ কাজ নয়। আর হিরোয়িনদের কথা তো ছেড়েই দিলাম।
কাদের সম্পর্কে কথা বলা হচ্ছে, তা নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন! জেনে নিন আপনার প্রিয় হিরো এবং হিরোয়িনদের সেই ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতার কথা।
১. বরুণ ধাবান আর ফ্রাঙ্ক সিনাট্রা:
আমেরিকার লাস ভেগাসে তখন চুটিয়ে চলছে "এ বি সি ডি-২" এর শুটিং। বাকি অনেকের সঙ্গে এক ঝাঁ চকচকে হোটেলে উঠেছিলেন বারুণ ধাবন। শতাব্দি প্রাচীন সেই হোটেলে এক সময় প্রায়ই আসতেন আমেরিকার বিখ্যাত গায়ক ফ্রাঙ্ক সিনাট্রা। আর সে কথা বরুণের অজানা ছিল না। হঠাৎই এক রাতে বারুণ তার রুমে কাউকে গান গাইতে শোনেন। মনের ভুল ভেবে প্রথমটায় সেভাবে গুরুত্ব না দিলেও রাত যত বাড়তে থাকে, তত বারুন স্পষ্ট শুনতে পান পুরুষ কন্ঠে কেউ গান গাইছে। নিজের মনে গান গাইলে যেমন গলার আওয়াজ হয়, সে রকম ছিল সেই পুরুষ কন্ঠ। এতক্ষণ পর্যন্ত নিজেকে সামলে রেখেছিলেন। কিন্তু যে মুহূর্তে গলার আওয়াজ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুমের দরজাগুলি আপনা থেকেই খুলতে শুরু করল, তখন আর বরুণ মনের জোর ধরে রাখতে পারেন নি। সেদিন রাতে বরুণের রুমে কি ফ্রাঙ্ক সিনাট্রাই এসেছিলেন? সে উত্তর যদিও আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
২. নীল নিতিন মুকেশের লাইট ম্যান:
বেশ কিছু বছক আগে নীল নিতিন মুকেশের একটা সিনেমা এসেছিল "৩জি" নামে। ছবিটি হরোর ফিল্ম ছিল এবং দুর্ভাগ্য বশত ছবিটি তৈরি করার সময় ইউনিটের অনেকেরই ভূতের সঙ্গে সামনাসামনি হয়েছিল। ভাববেন না মজা করছি। একই ঘটনা ঘটেছিল নীল নিতিন মুকেশ এবং তার এক লাইট ম্যানের সঙ্গেও। ঘটনাটা ছিল এমন...একদিন শুট চলাকালীন এক লাইট ম্যান হঠাৎই দ্রুত বেগে দৌড়ে সেট ছেরে পালাতে লাগালেন। তী হয়েছে? হটাৎ সে এমনভাবে দৌড়াচ্ছে কেন? এই ভেবে অনেকেই তার পিছনে ছুটল। যখন জিজ্ঞাস করা হল, তখন সেই লাইট ম্যান যা জানিয়েছিল তা বাস্তবিকই রোমাঞ্চকর বললে কম বলা হবে। তার বক্তব্য ছিল, সে যখন কাজ করছিল তখন মনে হল যেন কেউ তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমটায় সেভাবে ভয় না পলেও হঠাৎই যখন সেই আবছা অবয়বকে সে সামনে দিয়ে হেঁটে চলে যেতে দেখেছিল, তখন আর থাকতে না পেরে ভয় দৌড়াতে শুরু করেথিল। ভেবেথিল এমনটা করলে আর সেই ভূত তাকে ধরতে পারবে না। ভাববেন না শুধু মাত্র সেই লাইট ম্যানের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটেছিল। একই ঘটনা ঘটেছিল নীল নিতিন মুকেশ এবং ইউনিটের আরও অনেকের সঙ্গেই।
৩. নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি আর ছবির ফ্রেম:
"আতমা" সিনেমার শুটিং শেষে এক আজব থুরি ভূতুরে অভিজ্ঞতার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলন ছবির পরিচালক সুপর্ণ ভার্মা। ঘটনাটা ছিল এরকম... একটা সিনের শুটিং চলছিল পুরো দমে। নাওয়াজ তার সিনে এতটাই মগ্ন ছিলেন যে তার পিছনে থাকা একটা বড় কাঁচেক ফ্রেম যে বেঁকে ছিল, সে দিকে খেয়ালও করেননি। যদিও বিষয়াটা পরিচালকের চোখে পরেছিল। তিনি ভেবেছিলেন শটটা হয়ে গেলে ফ্রেমটা ঠিক করে দেবেন। কিন্তু যতবারই তিনি ফ্রেমটা ঠিক করছিলেন, ততবারই সেটি বেঁকে যাচ্ছিল। যদিও সেদিন হাওয়ার জোর এতটা ছিল না যে ফ্রেমটা বেঁকে যায়। এর পরে যে ঘটনাটা ঘটেছিল, তা আরও ভয়ানক। সেই নির্দিষ্ট সিনটির শুটিং শেষ হওয়া মাত্র ওই কাঁচেক ফ্রেমটা আপনা থেকেই মাটিতে পরে ভেঙে গিয়েছিল। যদিও যে দরিটা দিয়ে ফ্রেমটা ঝোলানো ছিল সেটা কিন্তু ছেরেনি। তাহলে... কোনও দিন যদি এই সিনেমাটা দেখেন তাহলে লক্ষ করবেন তো ফ্রেমটা কেমনভাবে ছিল।
৪.রানবীর সিং ও তার পেশওয়া বাজিরাও:
ভূতে বিশ্বাস না থাকলেও নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতেও গিয়ে গলাটা একটু হলেও কেঁপেছিল রনবীরের। বাজিরাও মাস্তানির শুটিং চলাকালীন প্রায়ই রানবীরের মনে হত তার পাশে কেউ যেন ঘোরাফেরা করছে। আর সেই অবয়ব যেন অনেকটা পেশোওয়া বাজিরেও যে ছবি পাওয়া গিয়েছিল তার মতোই দেখতে। এখানেই শেষ নয়, একদিন বাজিরাও-এর সেটে একটা রং করা দেওয়ালে সাদা ছোপ ছোপ কী যেন লেগে থাকতে দেখেন অনেকে। সেই ছোপগুলি মিলে একটা অবয়ব তৈরি হয়েছিল। আর সেই অবয়বের সঙ্গে হুবাহু মিল ছিল বাস্তবের পেশোয়ার। কেউ কি মজা করার জন্য এমনটা করেছিল। নাকি বাস্তবকিই কোনও শক্তি সেদিন নিজের অস্তিত্ব বুঝিয়েছিল?এই উত্তর যদিও আজও অজানা।
৫. বিপাশা বসু:
মুম্বাইয়ের মুকেশ মিলে তখল চলছিল "গুনা" সিনেমার শুটিং। সেই মিলের মধ্যেই একটা আলাদা ঘর দেওয়া হয়েছিল ছবির হিরোয়িন বিপাশা বসুকে। একদিন তিনি সেই ঘরে বসে একটা সিনের ডায়ালগ মুখস্ত করা চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কিছুতেই একটা লাইনও মনে রাখতে পারছিলেন না। সেই সঙ্গে শরীরে কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছিল বিপাশার। এক সময় অস্বস্তি এতটাই বেড়ে যায় যে বিপাশা ঘরটা চেঞ্জ করার সিদ্ধান্ত নেন। আর তারপরেই ঘটে এক আজব ঘটনা। অন্য ঘরে যাওয়া মাত্র বিপাশার শরীরের সেই অস্বস্তি কমে যেতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে ডায়লগ মুখস্ত করতেও আর কোনও অসুবিধা হচ্ছিল না। কেন এমনটা হয়েছিল? সে উত্তর পাওয়া না গলেও এই ঘটনার কিছু দিন পরেই অন্য একটা শুটিং চলাকালীন একই ঘটনা ঘটেছিল ওই ছবির হিরোয়িনের সঙ্গেও। কিন্তু বিপাশা সে যাত্রায় বেঁচে গলেও কোনও এক অজানা কারণে শুটিং শেষেই মৃত্যু হয়েছিল ওই হিরোয়িনের। এই ঘটনার পর থেকেই আজ পর্যন্ত বলি ইন্ডাস্ট্রির কেউ আর মুকেশ মিলে পুনরায় শুটিং করার সাহস পায়নি।
৬. গোবিন্দা আর সেই বুড়ি মহিলা:
বহু বছর আগে একটা সিনেমার শুটিং-এর জন্য এক পাহাড়ি গঞ্জে বেশ কয়েকদিন থাকতে হয়েছিল কমেডি কিং গোবিন্দাকে। সে সময় যে হোটেলে গোবিন্দা ছিলেন, সেখানে এক আজব অভজ্ঞতা হয়েছিল তার। একদিন মাঝ রাতে হঠাৎই গোঙানির আওয়াজ পেয়ে গোবিন্দার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। ঘুম চোখে উঠৈ এদিক ওদিক তাকাতেই তিনি দেখতে পান এক বুড়ি মহিলা তার খাটের উপর বসে কিছু বলতে চাইছেন। অনেক চেষ্টা করছেন। কিন্তু কিছুই বলতে পারছিলেন না সেই বয়স্কা। এমনটা দেখে গোবিন্দা এতটাই ভয় পয়ে গিয়েছিলেন যে সেই রাতেই মুম্বাই ফিরে এসেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে বলতে গিয়ে গোবিন্দা একবার বলেছিলেন,"আজও ঘুমের ঘোরে যখন সেই রাতের কথা মনে পরে তখন সারা শরীরে যেন ভয়ের এক তরঙ্গ ছুটে যায়।"