Just In
- 10 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 11 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 14 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 16 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
ভাত এবং রুটি এক সঙ্গে খেলে শরীরের কি কোনও ক্ষতি হয়?
একাধিক চিকিৎসকের মতে এই দুই ধরনের খাবার এক সঙ্গে খেলে শরীরে ফাইবারের চাহিদে যেমন পূর্ণ হয়, তেমনি এনার্জি এবং বাকি পুষ্টির ঘাটতিও দূর হয়, যা শুধু ভাত বা শুধু রুটি খেলে হয় না
এক সময় মনে করা হত ভাত এবং রুটি একসঙ্গেই খাওয়া উচিত। এমনটা করলে শরীরে পুষ্টির কোনও ঘাটতি থাকে না। কারণ ভাত হল কার্বোহাইড্রেট আর রুটি হল ফাইবার। ফলে শরীরের যে এনার্জির প্রয়োজন পরে তার যোগান দেয় ভাত, আর ফাইবার নানাবিধ রোগের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধরণায় কিছুটা হলেও বদল এসেছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ভাত-রুটির এই বন্ধুত্ব ভাঙার পক্ষে রায় দিলেও প্রাচীনপন্থী একদল চিকিৎসক এই অভ্যাসের মধ্যে কোনও ভুল খুঁজে পান না। তাই আজ এই প্রবন্ধে দুই পক্ষের ধরণাকেই তুলে ধরা হবে। প্রবন্ধটি পড়ার পর শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন আপনি।
ভাত এবং রুটি একসঙ্গে খাওয়া উচিত কেন?
একাধিক চিকিৎসকের মতে এই দুই ধরনের খাবার এক সঙ্গে খেলে শরীরে ফাইবারের চাহিদে যেমন পূর্ণ হয়, তেমনি এনার্জি এবং বাকি পুষ্টির ঘাটতিও দূর হয়, যা শুধু ভাত বা শুধু রুটি খেলে হয় না। কিন্তু আমরা যে ভাতের সঙ্গে সবজি বা মাছও খেয়ে থাকি। তাহলে...
গম থেকে আমরা যে ফাইবার পাই তা আমরা শাকসবজি খাওয়ার মধ্যে দিয়েও পেতে পারি। মূল কথা হল আমাদের শরীরে খনিজ, ভিটামিন এবং বাকি সব প্রয়োজনীয় উপাদান প্রবেশ করছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি ভাত,মাছ এবং সবজির মধ্যে দিয়ে সেই ঘাটতি আপনি পূরণ করতে পারেন, তাহলে কোনও ক্ষতি নেই। তবে একসঙ্গে ভাত এবং রুটি খেলে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, ক্যালোরি হিসেবে দেখতে গেলে ১ বাটি ভাত খেলে শরীরে যে পরিমাণ ক্যালোরি প্রবেশ করে, ২ টো রুটি খেলেও সেই একই ঘটনা ঘটে। যেখানে পার্থক্য়টা তৈরি হয়, সেটা ফাইবার কনটেন্টের দিক থেকে। রুটি খেলে শরীরে ফাইবারের চাহিদা পূরণ হয়। সেই সঙ্গে শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায় না। কিন্তু ভাত খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই তো ডায়াবেটিস রোগীদের ভাত খেতে মানা করেন চিকিৎসকেরা। এক্ষেত্রে আরেকটি জিনিস জেনে রাখা ভাল যে। আমরা খাওয়ার সময় খেয়াল না করলেও সব খাবার কিন্তু একইভাবে হজম হয় না। কোনও খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়, তো কোনও খাবার দেরিতে। সে দিক থেকে দেখতে গেলেও ভাত এবং রুটি এক সঙ্গে খাওয়ার বিষয়ে কোনও অসুবিধা দেখেন না সনাতনি চিকিৎসকেরা।
ভাত-রুটি এক সঙ্গে নৈব নৈব চ!
আধুনিক চিকিৎসকেদের একাংশ মনে করেন একেবারে আলাদা চরিত্রের দুটি খাবার একসঙ্গে খেলে শরীরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই তো হয় রুটি, না হয় ভাত খাওয়া উচিত। একসঙ্গে এই দু ধরনের খাবার যেন কখনই পরিবেশন করা না হয়। চিকিৎসকদের মতে, যদি রুটি না খেলে মন না ভরে, তাহলে ভাত খাওয়ার কম করে ২ ঘন্টা পরে রুটি খাওয়া যেতে পারে। তার আগে নয়। আসলে এই দুটি খাবার একসঙ্গে খেলে শরীরে কার্বোহাইড্রটের পরিমাণ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরের পক্ষে একসঙ্গে এই দুটি খাবার হজম করা অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে বদ হজম বা পেট খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আরেকটি কারণেও ভাত এবং রুটি একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে এই দু ধরনের খাবার এক সঙ্গে খেলে শরীরে অন্দরে ভাত এবং রুটির ভেতরে থাকা পুষ্টিকর উপাদানের মধ্যে লড়াই লেগে যায়। ফলে শরীরের পক্ষে পুষ্টিকর উপাদানগুলি ঠিক মতো শোষণ করা সম্ভব হয় না। আর খাবার থেকে শরীর যদি প্রয়োজনীয় পুষ্টিই না পায়, তাহলে এমন খাবার খেয়ে লাভ কী!
তাহলে সব শেষ কী দাঁড়াল?
চিকিৎসক মহলে বিবাদ যেহেতু তুঙ্গে তাই শেষ সিদ্ধান্ত আপনারই নিন। কেউ যদি দীর্ঘদিন ধরে ভাত রুটি এক সঙ্গে খেয়ে থাকেন এবং শরীর খারাপ না হয়, তাহলে সেই অভ্যাসে পরিবর্তন আনার কোনও প্রয়োজন নেই। তা সত্ত্বেও একথা বলা যেতে পারে যে তথাকথিত বাঙালি ডায়েট মেনে যদি খাবার খাওয়া যায়, তাহলে ভাত এবং রুটি একসঙ্গে না খেলেও চলে।
ভাতের পুষ্টিকর উপাদান:
১. ক্যালোরি- ১৩০
২. জল- ৬৯%
৩. প্রোটিন- ২.৪ গ্রাম
৪. কার্বোহাইড্রেট- ২৮.৭ গ্রাম
৫. ফ্যাট- ০.২ গ্রাম
৬. ভিটামিন বি১- ০.১৬ এম জি
৭. ভিটামিন বি২- ০.০২ এম জি
৮. ভিটামিন বি৩- ১.৪৯ এম জি
৯. ভিটামিন বি৫- ০.৪ এম জি
১০. ভিটামিন বি৬- ০.০৬ এম জি
রুটির পুষ্টিকর উপাদান:
১. ক্যালোরি- ১১০
২. ফ্যাট- ৩ গ্রাম
৩. সোডিয়াম- ১৯৫ এম জি
৪. পটাশিয়াম- ৯৬ এম জি
৫. কার্বোহাইড্রেট- ১৭ গ্রাম
৬. ডায়াটারি ফাইবার- ৩ গ্রাম
৭. প্রোটিন- ৪ গ্রাম
৮. ক্যালসিয়াম- ২%
৯. আয়রণ- ১৭%