Just In
‘স্বাস্থ্যকর’ খাবারের নামে বিষ খাচ্ছেন না তো ?
ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, তত চিনির বিকল্প হিসেবে চাহিদা বাড়ছে সুগার ফ্রির। কিন্তু এই খাবারটা কি বাস্তবিকই আমাদের নানা রোগের থেকে দূরে রাখে?
গত কয়েক দশকে সারা বিশ্বেই স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের সংখ্যা বেড়ছে। তবু কেন মানুষ শরীর সম্পর্কিত নানা বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা জানা নেই। আতিরিক্ত তেল শরীরের পক্ষে ভাল নয়। এমন খাবার খেলে হার্ট খারাপ হবে। বাড়বে কোলেস্টেরলও। তবু তেল চুপচুপে খাবার খাচ্ছেন অনেকে। শুধু কী তাই! চায়ে ৩-৪ চামচ চিনি গুলিয়ে খাওয়া লোকের সংখ্যাও কম নেই। এবার বুঝতে পারছেন সারা বিশ্বে কিছু রোগ কেন মহামারির আকার নিতে চলেছে। কিন্তু তবু বলব পরিস্থিতি এখনও হাতের বাইরে চলে যাইনি। কারণ যেখানে একদল শরীরকে ভাঙার কাজে লেগেছেন, সেখানে আরেকদল বাস্তবিকই সচেতন হয়ে শরীরকে কীভাবে ঠিক রাখা যা সেদিকে খেয়াল রাখতে শুরু করেছেন। তারা প্রতিদিন এক্সারসাইজ করছেন। খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর খাবারও। ফলে খারাপ-ভালর মধ্যে ভারসাম্যটা এখনও বিগড়ে যাইনি। কিন্তু চিন্তাটা অন্য জায়গায়! আজকাল বাজারে "হেলথ ফুড" নামে কিছু বিশেষ খাবারের চাহিদা খুব বেড়েছে। কারণ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা মনে করছেন এই সব খাবার খেলে শরীর রোগ মুক্ত থাকবে। ফলে দেদার বিকোচ্ছে এমন হেলথ ফুডের তকমা দেওয়া খাবারগুলি। তাই তো অনেক গৃহস্তে আজ চিনির জয়গা নিয়েছে সুগার ফ্রি। ফ্যাট ফ্রি খাবারের চাহিদাও চোখে পরার মতো বেড়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। এই সব হেলথ ফুডগুলি কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? নাকি সবই ভেজাল! এই উত্তর জানাটা জরুরি। না হলে যে মৃত্যুর ছোবল থেকে আমাদের কেউই বাঁচাতে পারবে না।
বেশ কিছু ইনভেস্টিগেশনের পর যা জানা গেছে, তা সত্যিই ভয়ঙ্কর। চলুন আর অপেক্ষা না করে জেনে নিন কোন কোন খাবারে মেশানো হচ্ছে বিষ!
১. সুগার ফ্রি:
হেলথ ফুডের মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হল এটি। কারণ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, তত চিনির বিকল্প হিসেবে চাহিদা বাড়ছে সুগার ফ্রির। কিন্তু এই খাবারটা কি বাস্তবিকই আমাদের নানা রোগের থেকে দূরে রাখে? উত্তর হল একেবারেই না। কারণ সুগার ফ্রিতে দেদার মেশানো হচ্ছে স্যাকারিন, আস্পারটেম, সুক্রালজ ইত্যাদি উপাদান। বিভিন্ন দোকানের সুগার ফ্রি মিষ্টিগুলোতেও এগুলো ব্যবহার করা হয়। এই উপাদানগুলির দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে প্রবেশ করলে মাথাব্যাথা, পেটের সমস্যা এমনকী কিডনি ফেইলিওর এবং ব্রেন টিউমার পর্যন্ত হতে পারে। তাহলে চিন্তা করুন, অস্বাস্থ্যকর চিনির বদলে যা খাচ্ছেন তা তো বেশি করে আপনাকে অসুস্থ করে তুলছে। তাই আর নয়, এবার সময় এসেছে নিজের এবং পরিবারের বাকি সদস্য়দের শরীরের কথা ভেবে চিনির প্রকৃত বিরল্প খুঁজে বার করার।
২. ডায়েট কোল্ড ড্রিঙ্ক:
সবাই বলে ডায়েট কোল ড্রিঙ্ক খেলে শরীরে কোনও ক্ষতি হয় না, যা সাধারণ ঠান্ডা পানীয় খেলে হয়ে থাকে। তাই তো স্বাস্থ্য সচেতন কমবয়সীদের মধ্যে এমন পানীয় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। তারা মনে করছেন কোল্ড ড্রিঙ্কের মতো ক্যালরি ডায়েট পানীয়তে থাকে না। এই ধরণা কিন্তু ভল প্রমাণিত হয়েছে। কারণ ডায়েট কোল্ড ড্রিঙ্কেও বেশিরভাগ সময় আর্টিফিশিয়াল সুইটনার ব্যবহার করা হয়, যা শরীরের পক্ষে এরেবারেই ভাল নয়। তাই তো সাধারণ পানীয়র জায়গায় বেশি টাকা দিয়ে কেনা ডায়েট কোল্ড ড্রিঙ্ক কোনও অংশেই কম ক্ষতিকারক নয়।
৩. ফ্যাট ফ্রি খাবার:
ওজন কমাতে অনেকই খাওয়া-দাওয়া একেবারে ছেড়ে দেন। সেই সঙ্গে বাজারে যেসব ফ্যাট ফ্রি খাবার আছে সেগুলি বেশি করে খাওয়া শুরু করেন। ফলে একদিকে যেমন শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়, তেমনি অন্যদিকে নানাবিধ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এমনটা কেন হয় জানেন? কারণ ফ্যাট ফ্রি খাবার হিসেবে বাজারে যা বিক্রি হয় তা বেশিরভাগই ফ্যাট ফ্রি হয় না। কারণ খাবারে চর্বি জাতীয় উপাদানের পরিমাণ যত কম হবে, তত তার স্বাদ খারাপ হবে। আর এমন খাবার মানুষে খেতে চাইবেন না। তাই তো ফ্যাট ফ্রি খাবারের নামে চর্বিযুক্ত খাবারই বেশিভাগ জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেকা গেছে তথাকথিত ফ্যাট ফ্রি খাবারে আর্টিফিশিয়াল স্বাদবর্ধক ব্যবহার করা হয়, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হার্টের প্রবলেম, কিডনির সমস্যা এবং ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। প্রসঙ্গত, চর্বি খেলেই মোটা হয়ে যাব- এই ধরণা কিন্তু ঠিক নয়। বেশি মাত্রায় চর্বি জাতীয় খাবার খেলে তবেই মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় জেনে রাখা ভাল যে শরীরকে সুস্থ রাখতে অল্প পরিমাণ ফ্যাটেরও প্রয়োজন পরে। এই উপাদানটি ত্বককে সুন্দর রাখার পাশাপাশি শরীরের প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো পরিমিত হারে ফ্যাট খাওয়া চলতেই পারে। তবে কোনও মতেই ফ্যাট ফ্রি খাবার খাওয়া চলবে না!
৪. ব্রেকফাস্টে সিরিয়াল জাতীয় খাবার খাওয়া:
অনেকেই মনে করেন ব্রেকফাস্টে সিরিয়াল জাতীয় খাবার খেলে ওজন কমে যায়। এই ধরণা একেবারে ঠিক নয়। বরং বেশি মাত্রায় এই ধরনের খাবার খেলে শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয় বাজারে বিক্রি হওয়া সিরিয়াল জাতীয় খাবারে অনেক সময়ই আর্টিফিশিয়াল সুইটনার এবং ফ্লেবার মেশানো হয়, যা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাই এমন ধরনের খাবার না খেয়ে ব্রেকফাস্টে দুটো হাতে করা রুটি আর সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন তাতে শরীর ভাল থাকবে।
৫. শরীর সুস্থ রাখতে যে যে খাবার ভুলেও ছোঁবেন না:
১. চিনি বেশি রয়েছে এমন ঠান্ডা পানীয়
২. পিৎজা
৩. সাদা পাঁউরুটি
৪. চিনি দেওয়া ফলের রস
৫. মার্জারিন
৬. পেস্ট্রি, কুকি এবং কেক
৭. আলু ভাজা এবং চিপস
৮. জাঙ্ক ফুড
৯. মিষ্টি দই
১০. আইস ক্রিম
১১. চকোলেট
১২. চকোলেট দেওয়া কফি