Just In
সুস্থ থাকতে এবার থেকে ভুলেও রাস্তায় তৈরি এই ৮ টি খাবার খাবেন না!
একাধিক গবেষণায় বারেবারে প্রমাণিত হয়েছে যে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় তৈরি খাবার খেলে পেটের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আরাও নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই সাবধান!
খিদের জ্বালায় অশান্ত পেটকে চটজলদি ঠান্ডা করতে আমরা অনেকেই রাস্তার দোকানে তৈরি একাধিক খাবার খেয়ে থাকি। কখনও মুখরোচক সিঙ্গারা, তো কখনও কোচুরি আর অফিস ফেরতা ফুচকা আহার তো রোজের রুটিনে রয়েছেই। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে এই সব তথাকথিত স্ট্রিট ফুড আমাদের শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। একাধিক গবেষণায় বারেবারে প্রমাণিত হয়েছে যে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় তৈরি খাবার খেলে পেটের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আরাও নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই সাবধান!
কিন্তু প্রশ্ন হল স্ট্রিট ফুডের তালিকায় খাবারের সংখ্যা তো কম নেই। সব খাবারকেই কি না বলতে হবে, নাকি বিশেষ কিছু খাবার থেকে দূরে থাকলেই চলবে? শরীরকে সুস্থ রাখতে রাস্তায় তৈরি কোনও খাবারই খাওয়া চলবে না। তবে এই প্রবন্ধে আলোচিত স্ট্রিট ফুডগুলি আগে এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ বেশ কিছু কেস স্টাডির পর দেখা গেছে এই খাবারগুলি বাকিদের তুলনায় শরীরের বেশি ক্ষতি করে।
এতদূর পড়ার পর নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে কোন কোন খাবারকে এবার থেকে না বলতে হবে, তাই তো! উত্তর পেতে চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে।
১. আলুর চপ, বেগুনি আর পাকোড়া:
সান্ধ্যকালীন আড্ডায় চায়ের সঙ্গে আলুর চপ বা পাকোড়া খাওয়ার অভ্যাসে আসক্ত লোকের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কিন্তু আপনাদের কী জানা আছে সুস্বাদু এই খাবারটি শরীরের জন্য একবারেই ভাল নয়। এমন খাবার খেয়ে গেলে শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে ওজন বৃদ্ধির সম্ভবনাও থাকে। শুধু কি তাই কোলেস্টেরল এবং ওজন বৃদ্ধির কারণে হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পায়।
২. সিঙ্গারা:
খাদ্য রসিক বাঙালিদের পছন্দের তালিকায় যে যে খাবারগুলি একেবারে উপরের দিকে রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল সিঙ্গারা। একথা সত্যিই যে মুচমুচে, নোন্তা এই খাবারটি সামনে এলে জিভকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সত্য়িই বেশ কঠিন কাজ। কিন্তু এবার থেকে এই কঠিন কাজটা যে কোনও উপায়ে করতে হবে বন্ধুরা। না হলে শরীরকে যে সুস্থ রাখা যাবে না। কিন্তু ত্রিভুজাকৃতি এই খাবারটির সঙ্গে শরীরে খারাপ হওয়ার কী সম্পর্কে আছে? একটি মাঝারি মাপের সিঙ্গারায় প্রায় ২৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে। এই পরিমাণ চর্বি শরীরে প্রবেশ করলে কী হতে পারে তা নিশ্চয় আর আলাদ করে বলে দিতে হবে না।
৩. ছোলা ভাটুরা:
কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ার হোক কী দিল্লির চাঁদনি চক বা মুম্বাইয়ের জুহু চপাটি, ভারতবর্ষের বিখ্যাত স্টিট ফুডের পাড়াগুলিতে সেই কোন কাল থেকে রাজত্ব করে চলেছে এই খাবারটি। কারণ আবার কি, সস্তায় সুস্বাদু খাবার খেতে কে না চায় বলুন! তাই তো টিফিন টাইম হোক কি অফিস শেষের পর, খিদে মেটাকে অনেকেরই প্রথম পছন্দ হয় ছোলা এবং ফুলকো ফুলকো ভাটুরা। এই ধরনের খাবার মাসে ১-২ বার খাওয়া চলতে পারে। কিন্তু প্রায়দিনই যদি কেউ তেলে ভাজা এই ধরণের খাবার খেয়ে থাকেন, তাহলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কারণ ২ টো ভাটুরা খেলে শরীরে প্রায় ১২০০ ক্যালোরি এবং ৫০ গ্রাম চর্বি প্রবেশ করে। আর এই পরিমাণ ক্যালোরি বার্ন করতে যে পরিমাণ শরীরচর্চার প্রয়োজন পরে তা কজনই বা করেন বলুন! ফলে শরীরে ক্যালোরির মাত্রা বেড়ে গিয়ে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক প্রভৃতি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে অ্যাসিডিটি এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
৪. কচুরি:
খাস্তা হোক কী সাধারণ কচুরি, কোনটাই শরীরের পক্ষে ভাল নয়। এমন ধরনের খাবার দীর্ঘদিন ধরে খেয়ে গেলে অ্যাসিডিটি, ওজন বৃদ্ধি, করোনারি হার্ট ডিজিজ প্রভৃতি রোগের প্রকোপ চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। তাই রবিবাসরীয় ব্রেকফাস্টে এবার থেকে গরম গরম কচুরির জায়গায় অন্য কিছু খাওয়া শুরু করুন। না হলে কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না।
৫. ঘটি গরম বা ঐ জাতীয় কোনও ভুজিয়া:
অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে সময় কাটাতে ক্লান্তি চাকুরের প্রথম পছন্দ হয় ঘটি গরম। আরে ৫-১০ টাকা খরচ করলেই মুখ চলতে চলতে যে আধ ঘন্টা সময় কেটে যায়। তাই তো এমন সান্ধ্যকালীন স্ন্যাক্সের চাহিদা এত তুঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে একটাই প্রশ্ন করতে চাই, সুস্থ থাকাটা জরুরি, নাকি স্বাদের গোলাম হয়ে থাকাটা বেশি প্রয়োজনীয়? উত্তরটা নিশ্চয় সবারই জানা। তাই তো আপনাদের কাছে অনুরোধ এমন ধরনের খাবার খাওয়া কমান, না হলে কিন্তু বিপদ! কারণ ঘটি গরম তৈরি করতে যে ভুজিয়ার প্রয়োজন পরে, তা দীর্ঘদিন স্টোর করে রাখতে বেশ কিছু ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে রক্তচাপ বাড়াতে এবং শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করার পিছনেও দায়ি থাকে এই সব ক্ষতিকর ক্যামিকেলগুলি।
৬. প্যাটিস:
এমন ধরনের খাবার খেলে চোখের নিমেষে শরীরের অন্দরে কার্বোহাইড্রেট এবং স্টার্চের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে শরীরে এমন ধরনের উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া কিন্তু একেবারেই ভাল লক্ষণ নয়।
৭. ফুচকা:
স্বাদে যেমন এক নম্বর, তেমনি শরীর খারাপ করার ক্ষেত্রেও বাকি স্ট্রিট ফুডের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ফুচকা। জানি জানি, ফুচকা প্রেমীদের আমার কথা নিশ্চয় ভাল লাগছে না। কিন্তু গবেষণা বলছে এমন ধরনের খাবার বেশি মাত্রায় খেলে বদ হজম এবং বারংবার পেট খারাপ হওয়ার মতো সমস্যা যেমন হয়, তেমনি ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও থাকে। কারণ বেশিরভাগ জায়গাতেই পোড়া তেলে ডিপ ফ্রাই করে ফুটকা তৈরি করা হয়। আর এমন খাবার যে শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়, তা তো সবারই জানা।
৮. জিলিপি:
রাস্তার দোকানে কী ধরনের তেলে জিলিপ ভাজা হয়, তা কখনও লক্ষ করেছেন। বেশিরভাগ জায়গাতেই পোড়া তেলে এই ধরনের মিষ্টি তৈরি করা হয়। ফলে এমন ধরনের জিলিপি দীর্ঘ সময় ধরে খেয়ে গেলে পেটের দফারফা হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আরও সব রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তাই খুব যদি জিলিপি খেতে ইচ্ছা করেস তাহলে নামকরা কোনও মিষ্টির দোকান থেকে কিনে খাবেন, রাস্তায় দোকান থেকে নয়!